অনলাইন ইনকামের সহজ পথ।এখানে আছে ইনকাম করার অসংখ্য উপায়।সেইরকমই একটি উপায় ড্রপ শিপিং সম্পর্কে আজকে আমার আলোচনা।
ভূমিকাঃ
ডিজিটাল যুগে মানুষ ইন্টারনেটে মাধ্যমে ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম করছে। অনলাইন ইনকাম কারো কারো জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। কারণ বর্তমানে অনেকেই অনলাইন পেশাকেই প্রফেশন হিসেবে বেছে নিচ্ছে।
আজকালকার মানুষ নিজেদের ক্যারিয়ার নিয়ে বেশ সচেতন। তাই তারা সবাই চিন্তা করে লেখাপড়া করে ভালো একটা চাকরি করবে। একটা ভালো চাকরি মানে একটা মোটা অংকের স্যালারি। আর এই বেতন এর উপরই নির্ভর করে একটা পরিবার কতটা সচ্ছল হবে।
সহজ কথায় বলতে হবে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত এই যে পার্থক্যগুলো এগুলো হয় মূলত কোন পরিবার কতটা সচ্ছল তার উপর ভিত্তি করে। আর স্বচ্ছলতা ভিত্তিক নির্ভর করে কি কত টাকা ইনকাম করে তার উপর।
সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে বর্তমান যুগের একটা মানুষের জীবনে টাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই সবাই চায় যেভাবে হোক কিছু একটা কাজ করে টাকা ইনকাম করতে। এতোকাল ধরে বেশিরভাগ মানুষই চাকরির পেছনে ছুটেছে। কারন একটা চাকরি তো পারে একটা সংসারের স্বচ্ছলতা এনে দিতে।
এজন্য মানুষ জোর দিয়ে লেখাপড়া করে আর সবাই স্বপ্ন বুনে লেখাপড়া শেষ করে ভালো একটা চাকরি করবে। কিন্তু বর্তমানে যে পরিস্থিতি প্রতিযোগিতাপূর্ণ। চাকরি পাওয়াই মুশকিল। মানুষতো হাস আগের মত অসচেতন নেই তাই তারা হাত পা গুটিয়ে বসে থাকে না। কোন না কোন একটা উপায় বের করেই নিচ্ছে নতুন। আরে বেকারত্বের ভবিষ্যৎ থেকে বেরিয়ে এসে বরণ করে নিচ্ছে অনলাইন পেশাকে।
কারণ অনলাইন ইনকাম সহজ। যে কেউ চাইলেই তার দক্ষতা, শ্রম ,মেধা কাজে লাগিয়ে অনলাইনে ঘরে বসেই বেশ ভাল অঙ্কের টাকা ইনকাম করতে পারে। বিশ্বব্যাপীষতৈরি করতে পারেন নিজের একটা পরিচয়।
আজকের আলোচনার বিষয়ঃ
আজকে আমি আলোচনা করব অনলাইনে আয় করার খুব সহজ একটা পদ্ধতি সম্পর্কে। যে পদ্ধতির নাম ড্রপ শিপিং।
আজকাল ইন্টারনেটের যুগে আমরা হয়তো অনেকেই ড্রপ শিপিং কথাটির সাথে পরিচিত। আবার এমন অনেকে আছে যাদের কাছে এই জিনিসটি একদমই নতুন। আজকে আমি নতুনদের জন্য কিছু কথা বলব।চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে ড্রপসিপিং সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
ড্রপ শিপিং কি?
Drop shipping মূলত ই-কমার্স বিজনেস এর অন্তর্গত। ড্রপ শিপিং বলতে এমন একটি ব্যবসায়ী পদ্ধতিকে বোঝায়, যে পদ্ধতিতে বিক্রেতা কোন পণ্যের অর্ডার নিয়ে তৃতীয় কোনো পক্ষের কাছ থেকে সেই পণ্য সরবরাহ করে ক্রেতার কাছে ডেলিভারি দিয়ে থাকে।
অর্থাৎ এখানে বিক্রেতা সরাসরি নিজের উৎপাদিত কোন পণ্য বিক্রি করছে না। বিক্রেতা যেকোনো চাহিদাপূর্ণ কোন পণ্যের অর্ডার নিয়ে সেই পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির কাছ থেকে পণ্য সরবরাহ করে যে অর্ডার করেছে তার কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। এক্ষেত্রে বিক্রেতার নিজস্ব কোন বিনিয়োগ করার প্রয়োজন হয়না।
আচ্ছা বিষয়টা আমি তো সহজ ভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছি, ধরুন আপনার হাতে বর্তমানে কোন টাকা পয়সা নেই কিন্তু আপনি চাচ্ছেন বিজনেস করতে। এখন আপনি ইউনিক কোন একটা ড্রেস দেখলেন যে ড্রেসটা অনলাইনে খুব বেশি ট্রেন্ডি এবং চলছে।
স্বাভাবিকভাবেই বেশিরভাগ মানুষের চাহিদা ওইটার উপরে। আপনি দেখলেন অনলাইনে ড্রেসটার দাম 1700 টাকা। এরপর আপনি ডিজে কোম্পানি উৎপাদন করে সে কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে সেখান এড্রেসটি 900 টাকায় কিনলেন। এড্রেসটি আপনি অনলাইনে সতেরোশো টাকার সেল করলেন। আপনি কত দিয়ে কিনলেন এবং কত টাকায় বিক্রি করলেন। দেখা যাচ্ছে আপনি প্রায় দ্বিগুণ দামে ড্রেসটি সেল করেছেন। এক্ষেত্রে আপনার 800 টাকা প্রফিট। আর এইটা হচ্ছে আপনার ব্যবসা।
এভাবে এভাবে আপনি যেকোন চাহিদা পূর্ণ প্রোডাক্ট অ প্রথমে অর্ডার নিয়ে তারপর অন্য কোন জায়গা থেকে কম দামে সে জিনিসটি কিনে আপনার নিজস্ব একটা মূল্য যোগ করে সেল দিয়ে দিবেন।
ড্রপ শিপিং করতে কি কি লাগবে?
হ্যাঁ এখন এই প্রয়োজনীয় জিনিসটি সম্পর্কে বলবো। করতে হলে আপনার যা যা প্রয়োজন সেগুলো হলোঃ
১. একটি স্মার্টফোন অথবা একটি কম্পিউটার অথবা একটি ল্যাপটপ।
২. ইন্টারনেট সংযোগ।
৩. আপনার নিজস্ব একটি অনলাইন স্টোর। এজন্য আপনার একটি ডোমেইন এবং একটি হোস্টিং এর প্রয়োজন হবে। আপনার সুবিধা অনুযায়ী পেইড অথবা ফ্রী যেকোনো একটি সার্ভিস দিয়ে কাজ চালাতে পারেন।
৪. একটি পেপাল একাউন্ট অথবা ব্যাংক একাউন্ট।
৫. প্রডাক্ট রিলেটেড ওয়েবসাইট।
৬. ভালো মানের ভেন্ডর।
ব্যাস এতটুকুই। এগুলো থাকলেই আপনি খুব সহজেই অনলাইনে ঘরে বসে আপনার হাতে থাকায় স্মার্টফোনটি ব্যবহার করে ইনকাম করে স্বাবলম্বী হতে পারবেন। এজন্য আপনার দরকার হবে শুধুমাত্র সঠিক ভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়া।
ড্রপশিপিং এর সুবিধা অসুবিধাঃ
যেহেতু এটা অনলাইন ভিত্তিক রাস্তায় এর কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা তো অবশ্যই রয়েছে তাই না। আমি এখানে কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করব। ড্রপ শিপিং ব্যবসা যদি বুঝে শুনে করা যায় তাহলে এটা খুবই সুবিধাজনক।
খুব কম পরিশ্রম করে আপনি অল্প সময়ে এর কাছ থেকে অনেক লাভবান হতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে সব সময় মাথায় রাখতে হবে যে, আপনি যে বন্যার বিজ্ঞাপনটি দিচ্ছেন সেই পণ্য সরবরাহ করতে পারবেন কিনা ,কোন কোম্পানির কাছ থেকে নিয়েছেন বা কোন ওয়েবসাইট থেকে নিচ্ছেন তারা কি রিয়েল বা অরিজিনাল প্রোডাক্ট সাপ্লাই দিচ্ছে কিনা সব কিছু খোঁজখবর নিতে হবে।
যদি আপনি অথেন্টিক প্রোডাক্ট নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভালোভাবে ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিতে পারেন তাহলে বুঝে নিতে পারেন ড্রপ শিপিং ব্যবসা করার জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ হবে।
এই সাইটে কাজ করার জন্য আপনার নির্দিষ্ট কোন সীমা থাকবেনা আপনি যত খুশি তত আর্ন করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি যত ভাল সেবা দিতে পারবেন তত বেশি ইনকাম করতে পারবেন। আপনার সার্ভিসের উপরে নির্ভর করবে আপনার ইনকাম।
এই বিজনেস করার জন্য আপনি স্বনামধন্য কিছু অনলাইন কোম্পানির সহায়তা নিতে পারেন যারা অরিজিনাল প্রোডাক্ট সাপ্লাই দিবে কোয়ালিটি মেইনটেইন করে।Amazon,Flipcart,Alibaba, Alibaba express,Ebay ইত্যাদি অনলাইন ওয়েব সাইট গুলো থেকে খুব সহজেই আপনি প্রোডাক্ট কালেক্ট করে ক্রেতার কাছে ডেলিভারি দিতে পারবেন।
প্রত্যেকটা জিনিসের সুবিধার পাশাপাশি কিছু না কিছু অসুবিধা তো থেকেই যায়। সেরকমই ড্রপ শিপিং কিছু অসুবিধা রয়েছে।
অনেক সময় যেকোনো কারণে আপনি যে ছবিটি আপলোড দিলেন সেই ছবিটির মত হুবহু প্রোডাক্ট আসলো না অন্য কোন প্রোডাক্ট চলে আসলো তখন আপনি বিপদে পড়ে যাবেন। কারণ কাস্টমার তো আপনাকেই ধরবে। আপনার কে এর ভুক্তভোগী হতে হবে।
আপনি যদি নির্দোষ হয়ে থাকেন তবুও আপনাকে এর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে ভুলভাল প্রোডাক্ট ডেলিভারি দেয়ার জন্য জরিমানার সম্মুখীন হতে হয়। তবে আপনি যদি সাবধানে খোঁজখবর নিয়ে ভালো কোন ওয়েবসাইট থেকে পণ্য শিপিং করেন তাহলে এই ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন এখানে অসুবিধার থেকে সুবিধা ভাগটাই বেশি। তাই আপনি যদি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেন তাহলে অনলাইন ইনকামের জন্য ড্রপ শিপিং আপনার জন্য বেস্ট।
উপসংহারঃ
সবশেষে বলবো চাকরির পেছনে ছুটে সময় নষ্ট না করে অনলাইনে বিজনেস করা বেটার।কারণ এখানে ঘরে বসে আপনি নিজের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ইনকাম করতে পারছেন। ইভেন এখানে এমনও অনেক ক্যাটাগরি আছে যেখানে কোন বিনিয়োগ ছাড়াই অনেক টাকা ইনকাম করা যায়।
You must be logged in to post a comment.