""স্বপ্ন"" জীবনের সবটুকু সময় শুধু স্বপ্ন দেখতে আর সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই চলে যায়। তবুও আমাদের স্বপ্নের শেষ নাই একের পর এক স্বপ্ন শুধু আসতেই থাকে।
ঠিক তেমনি আমার সাথেও। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার স্বপ্ন ছিল কবে হাটা শিখব কবে কথা বলতে পারব। কিন্তু যখন হাটা ও কথা বলা শিখে গেলাম তখন আমার স্বপ্ন খেলাধুলা করা।
যখন আরো একটু বড় হলাম তখন স্বপ্নটা শুধু আমার না এখন আমার স্বপ্নের সাথে আমার পরিবারের স্বপ্নটাও জরিয়ে গেল। বাবা-মার স্বপ্ন ভালো করে পড়াশোনা করে ডাক্তার হতে হবে।
শুরু হলো নতুন আরেকটা স্বপ্ন যদিও আমার স্বপ্ন ছিল ক্রিকেটার হবো কিন্তু তখন এতোটাও ভালো খেলতাম না যে বাড়িতে বলব আমি ক্রিকেটার হতে চাই। তাই এই স্বপ্ন বাদ দিয়ে বাবা-মার স্বপ্নকে নিজের স্বপ্ন করে নিয়ে কাজ শুরু করলাম।
যখন ক্লাস পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি তখন আরেকটা নতুন স্বপ্ন চলে আসে যে আমাকে সমমান পরীক্ষায় A+ পেতে হবে শুরু হলো সেই প্রস্তুতি। কিন্তু আমি ছিলাম খুব ফাকিবাজি ঠিকমত পড়াশোনা করতাম না ফলস্বরূপ রেজাল্ট হলো খুবি খারাপ।
বাবা-মাকে খুশি করতে পারি নাই তখন ছোট ছিলাম এতো কিছুই বুঝতামও না। তবে সেই ডাক্তার হবার স্বপ্নটা কিন্তু এখনো ছিল।
রেজাল্টের পর সবার স্বপ্ন যে ভালো স্কুলে পড়লে ভালো কিছু করতে পারব তো বাবা-মার কথা অনুযায়ী একটা প্রাইভেট স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা দিলাম কিন্তু কি যে হলো এখনো বুঝি নাই। এই স্বপ্নটাও পূরণ হয় নি।
ভর্তি হলাম মামার গ্রামের স্কুলে ক্লাস রোল হলো ৪৮। আসলে তখন খুবি বোকা ছিলাম আর বেশি কথাও বলতাম না। তো যাইহোক বাবা-মা বলল পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে রোল এগিয়ে আনতে হবে।
তো শুরু হলো নতুন আরেক স্বপ্নের। যখন পরীক্ষার সময় আসল তখন একটাই স্বপ্ন যেভাবেই হোক রোল এগিয়ে আনতে হবে। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর অশেষ রহমতে রোল হলো ৪।
সেইদিন যে কতটা খুশি হইছিলাম তা বলে শুরু করা যাবে না। তাড়াতাড়ি করে বাড়িতে এসে বাবা-মাকে যখন খবরটা দিলাম আমার মতো তারাও অনেক খুশি হলো।
তবে পাশের বাড়িতে একটা ভাই ছিল তিনি আমাকে বললেন এইবার রেজাল্ট অনেল ভালো হইছে তবে রোল ১ থেকে ২ এর মধ্যে আনতে হবে। এটা শোনার পর নতুন আরেক স্বপ্ন। আল্লাহর কাছে শুধু এটাই চাওয়া।
অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা হলো আলহামদুলিল্লাহ সেখানেও ভালো রেজাল্ট করলাম কিন্তু আমকে কেউ বলে নাই আমার রোলটা কত হইছিল।
কিন্তু আমার মামা বাবা-মাকে ঠিকই বলছিল। কিছুদিন পর আমি রোলটা শোনার পর বাড়িতে এসে বললে সবাই বলল এটা তো অর্ধবার্ষিক এখন বার্ষিক পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে হবে।
কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ সেই পরীক্ষায় রোল আমার ৪ ই থাকে।। ক্লাস এইটে উঠলাম এখন নতুন স্বপ্ন জেএসসিতে Golden A+ পেতে হবে আর বাবা বলল Golden A+ পাইলে আমাকে একটা স্কিনটাস ফোন কিনে দিবে ।
আমিতো সেই খুশি শুরু হলো নতুন যাত্রা অবশেষে পরীক্ষার পর রেজাল্ট হলো কিন্তু আমিতো রেজাল্ট দেখতে পারি না বন্ধুরা ফোন দিচ্ছে বলতেছে ওরা A+ পাইছে কিন্তু আমিতো রেজাল্ট এখনো দেখি নাই।
তো বন্ধুরা বলল এই মেডাম মানে ম্যামকে ফোন দিয়ে শোন। তারাতাড়ি করে ম্যামকে ফোন দিয়ে ফোনটা মার কাছে দিলাম আসলে আমি ম্যামকে দেখে খুব ভয় পেতাম আর ফোনেও আমি কথা বলতে পারতাম না,
শুধুমাত্র বন্ধু বাদে তো ম্যাম ফোন ধরল মা সালাম দিয়ে রেজাল্ট জানতে চাইলো ম্যাম শুধু বলতেছে জাহিদ অনেক ভালো রেজাল্ট করছে কিন্তু রেজাল্টটা কি সেটা বলতে চাচ্ছে না তো মা বলল কেমন রেজাল্ট তখন ম্যাম বলল জাহিদ A+ পাইছে।
এইকথা শোনার পর মার চোখ দিয়ে অঝরে পানি পরতে শুরু করল।।আমি দেখে তো অবাক পরে রেজাল্ট মার থেকে শোনার পর নিজের মনে হচ্ছিল আলহামদুলিল্লাহ যাক এইবার হয়তো বাবা-মা খুশি হইছে।
একটু পর বাবা আসল, আব্বু আসতে না আসতেই মা বলল যাও মিষ্টি কিনে আনো ছেলের রেজাল্ট বের হইছে A+ পাইছে এই কথা শোনার পর আব্বু একটুও দেরি না করে সাথে সাথে রেডি হয়ে মিষ্টি কিনতে গেল।
তখন আমি যে কত খুশি হইছিলাম যাক আলহামদুলিল্লাহ এইবার আব্বু আর মা দুইজনই অনেক খুশি হইছে।
আমার রেজাল্টের কথা শুনে সবাই অনেক খুশি। আসলে আল্লাহ তায়ালা আমকে কোন জিনিসের অভাব বুঝতে দেই নাই একজন্য আল্লাহর আরেকবার শুকরিয়া করি আলহামদুলিল্লাহ৷ তো এখন আসল সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়,
আমি বিজ্ঞান নিয়ে পড়ব নাকি মানবিক নিয়ে ওই যে আগের স্বপ্ন ডাক্তার হতে হবে তাই বিজ্ঞানই নিলাম। মামা বলল না পাড়লে পরে পরিবর্তন করে নিতে।
শুরু হলো নতুন আরেক স্বপ্ন। এসএসসিতে Golden A+ পেতে হবে জেএসসিতে তো শুধু A+ পাইছি এখন আর A+ এর দাম নাই। কি র করব শুরু আবার৷ কিন্তু আমিতো পড়াশোনা বাদ দিয়ে শুধু খেলাধুলা করতাম স্কুলেও প্রতিদিন যেতাম না।
দেখতে দেখতে পরীক্ষা শেষ হয়ে গেল রেজাল্ট এইবার নিজেই দেখলাম যে আলহামদুলিল্লাহ A+ পাইছি। আগের মতো এইবারো সবাই খুশি।এখন স্বপ্ন যোগ হলো আরেকটা ভালো কলেজে ভর্তি হতে হবে।
জীবনে স্বপ্নের শেষ নাই তাই সেইসকল স্বপ্নকে আকরে ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। স্বপ্নতো সবাই দেখে কিন্তু সেই স্বপ্নকে পূর্ণতা দিতে সবাই পারে না।
তাই আমাদের উচিত স্বপ্নকে ঠিক করা এবং সেই অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করা। তবে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখা যাবে না, এমনভাবে স্বপ্ন দেখতে হবে যে স্বপ্ন ঠিক মতো ঘুমাতে দিবে না।
জীবনে অনেক স্বপ্ন দেখতে হবে এবং সেই স্বপ্নগুলো পূরণ করতে হবে ইনশাআল্লাহ...
আপনার আর্টিকেলে ইনকাম বারাতে চাইলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে গ্রুপে জয়েন হন।
https://www.facebook.com/groups/4923657331062352/?ref=share
💖
You must be logged in to post a comment.