বর্তমান সময়ে অনলাইনের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রযুক্তির দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাওয়ায় অনলাইন ব্যবহার আরও অন্যতম হয়ে উঠেছে আমাদের কাছে। আর এই সময়ে আমরা অনলাইন কে ছাড়া আমরা নিজেদেরকে কল্পনাই করতে পারি না।
স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, যে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অনলাইনের ব্যবহার অনেক বেড়ে গিয়েছে। এখন অনলাইনে মাধ্যমে তারা তাদের বেশিভাগ কাজ করে থাকে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যে মানুষ এখন ঘরে বসে থেকে অনলাইন কে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে যাচ্ছে।এটি শুধু আমাদের দেশেই নয় সারাবিশ্বে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে।
সারাবিশ্ব এখন প্রতিনিয়ত এটির ওপর নির্ভর করে চলছে। সাধারণত বর্তমান বিশ্বের প্রতিটি দেশ উন্নত হওয়ার পিছনে অনলাইনের রয়েছে এক বিশেষ অবদান। এখন সারা বিশ্বে এটিকে নিয়ে বিভিন্ন কাজ আদান প্রদান করা সহ তারা তাদের বিভিন্ন প্রয়োজন মিটিয়ে থাকে। আমাদের বাংলাদেশেও অনলাইন ব্যবহারের রয়েছে এক বিশেষ জনপ্রিয়তা।
এখন আমাদের প্রতিদিনের বেশিরভাগ কাজকর্ম অনলাইনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। আর এজন্যই আমরা যে যুগে বসবাস করছি সেটিকে অনলাইন যুগ বলা হয়। অতীতে আমরা অনলাইন কে নিয়ে এতো কিছু ভাবতেই পারতাম না। আমরা ভাবতে পারতাম না যে অনলাইনের মাধ্যমে আমরা কিভাবে ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করা সহ ঘরে বসে কিভাবে অনলাইনে মার্কেট করতে পারবেন।
কিন্তু বর্তমান সময়ের পরিবর্তনে এসব কিছু আমাদের হাতের নাগালে হয়ে গিয়েছে। আর এজন্যই অনলাইন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে থাকে। আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে আমাদেরকে অবশ্যই অনলাইন ব্যবহার সম্পর্কে জানতে হবে। নয়তো আমরা আজকের এই দিনে চলতে গেলে আমাদের নানা সমস্যায় পড়তে হবে।
অনলাইনের এত প্রভাবের সময় মানুষের হাতের নাগালে এসে গিয়েছে কেনাকাটা করা। সাধারণত কেনাকাটা সহ আমরা যাবতীয় খরচ পাতি এখন অনলাইনের মাধ্যমে করে থাকি। অনলাইনে এসব কিছু করতে গেলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমাদেরকে হাতে গুনে টাকা ব্যবহার করতে হয়না। সেক্ষেত্রে আমাদের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড ব্যবহার করতে হয়।
আর সেই কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা নানান কিছুর বিল পরিশোধ সহ নানান লেনদেন ও নানা কেনাকাটা করে থাকি। বর্তমান সময়ে আমাদের এই কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করা অনেক জনপ্রিয় হয়ে যাচ্ছে। আমরা অনেকেই আছি যারা এখন প্রতিনিয়ত এই কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করে যাচ্ছি। আমাদের আর্থিক লেনদেনের একটা জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ক্রেডিট কার্ড ও ডেবিট কার্ড গুলো।
আজকের এই দিনে আমরা অধিকাংশ মানুষ এই কার্ডগুলো ব্যবহার করে থাকি। আমরা যদি কোন বাইরের দেশে যাই সেখানে আমাদের এই কার্ডের জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়। আমরা অধিকাংশ লেনদেন এই কার্ডগুলোর মাধ্যমে করে থাকি। তবে আপনি কোন কার্ডটি ব্যবহার করছেন ক্রেডিট কার্ড না ডেবিট কার্ড।
এসব কার্ড শুধু ক্রয় করলেই হবে না এর ব্যবহারের উপরেও আপনাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে। হতে পারে বর্তমান সময় আমাদের এই প্লাস্টিকের টুকরো মাধ্যমে কেনাকাটা ও লেনদেন এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এটাও সত্যি এগুলো এখন আমাদের জীবনব্যবস্থাকে এতটাই সহজ ও বিশেষ ঝামেলাহীন করে ফেলেছে যে আমরা যদি বাড়ি থেকে বের হই মানিব্যাগের নগদ অর্থের চেয়ে ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড থাকালেই একটু বেশি স্বস্তি বোধ করে থাকি।
কিন্তু আপনার জন্য এই দুটি কার্ডের মধ্যে কোন কার্ডটি ব্যবহার করা ভালো হতে পারে এগুলো একবারও ভেবে দেখেছেন কি। হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা এই দুইটি কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা সহ আরো নানান কিছু। আমরা এটা হয়তো জানি না যে কোন কোন কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা গুলো কি কি। তাই আজকে আমরা আপনাদের সথে এই দুই কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। নিচে সেগুলো আলোচনা করা হলো:
ক্রেডিট কার্ড:
বর্তমান সময়ে আমাদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের এক বিশেষ ধরনের জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়। আমরা অনেকেই আছি যারা এই কার্ডটিকে অনেক ভালো মনে করে থাকি। তবে ক্রেডিট কার্ড হচ্ছে এমন একটি মেথড যার সাহায্যে আপনি একটি ব্যাংক থেকে টাকা ধার করে বিভিন্নভাবে খরচ করতে পারবেন। আপনার এই ধার করা টাকা নেয়া টিকেই মূলত ক্রেডিট কার্ড বলা হয়।
সাধারণত আপনার মাসিক ইনকাম এর উপরে নির্ভর করে আপনাকে ব্যাংক লিমিটেড থাকবে। যদি মনে করেন আপনার মাসিক ইনকাম ৫০ হাজার টাকা হয় তাহলে আপনি সম্ভবত একটি ১ লক্ষ টাকা লিমিটেডের ক্রেডিট কার্ড পেতে পারেন। তবে এই কার্ডের লিমিট বিভিন্ন ভাগে কমবেশি হতে পারে এটা নির্ভর করে সাধারণত আপনি যেই ব্যাঙ্ক থেকে ক্রেডিট কার্ড সংগ্রহ করছেন সেই ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী।
তবে আপনি ক্রেডিট কার্ডের জন্য এলিজিবল হবেন কিনা সেটাই এখন প্রশ্ন হয়ে থাকে। আপনি যদি কোনো ভালোমানের ইনকাম না করেন বা ভাল মানের চাকরিজীবী বা ব্যবসায়িক না হন তাহলে আপনাকে ক্রেডিট কার্ড এর জন্য হয়তো এলিজিবল নাও করতে পারে।
কেননা এই কার্ডের লিমিটেড আপনি যে প্রতি মাসের স্যালারি পাবেন তার ওপর ভিত্তি করে এটি আপনাকে দেওয়া হয়ে থাকে। এই ক্রেডিট কার্ডটা পাওয়ার পরে আপনি যেকোনো জায়গায় পেমেন্ট করার জন্য আপনি এটাকে ব্যবহার করতে পারেন সেখানে একটি পেমেন্ট মেথড হিসেবে একটি কে অ্যাকসেপ্ট করা হবে।
এটির মাধ্যমে আপনি যত জায়গায় পেমেন্ট করবেন মাস শেষ হয়ে গেলে আপনার সেইসব অ্যামাউন্ট ব্যাংক থেকে একটি বিল ইস্যু করা হবে। এই বিলটি আপনাকে ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী তাদের দেওয়া নির্ধারিত দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। তবে আপনি যদি এর মাসিক বিলটি দ্রুত পরিশোধ করে দেন আপনাকে পরের মাসের জন্য আবার ক্রেডিট লিমিট তারা দিয়ে থাকবে।
এই কার্ডটি সাধারণত বিভিন্ন জায়গায় অফলাইন অনলাইন ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু আপনি যদি এই ক্রেডিট কার্ড টিকে বাংলাদেশের বাইরে গিয়ে ব্যবহার করতে চান অর্থাৎ ইন্টার্নেশনাল ট্রানজেকশন করতে চান তখন আপনার অবশ্যই একটি ইন্টারন্যাশনাল পাসপোর্ট এর দরকার হবে।
আর যদি আপনার ইন্টারন্যাশনাল পাসপোর্ট না থাকে তাহলে আপনার যত লক্ষ লক্ষ টাকায় ক্রেডিট লিমিট হয়ে থাকুক না কেন আপনি সেই দেশের বাইরে যেয়ে কোন দেশে কোন রকম পেমেন্ট বা লেনদেন করতে পারবেন না এই ক্রেডিট কার্ডের সাহায্যে।
ডেবিট কার্ড:
আমাদের বর্তমান সময়ে ডেবিট কার্ড টি লেনদেনের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে। বর্তমান অধিকাংশ মানুষ এটি ব্যবহার করে থাকে। দিন যত যাচ্ছে ততোই মানুষের মধ্যে এটি জনপ্রিয়তা শিউরে উঠছে। বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যাংক থেকেই আপনি এটি পেয়ে থাকবেন।
সাধারণত আমরা যখন একটি ব্যাংকে একাউন্ট করে থাকি এবং ওই ব্যাংকে থাকা অ্যাকাউন্টির মধ্যে থাকা টাকা খরচ করার জন্য আমাদেরকে হয়তো বিভিন্ন মানের এটিএম কার্ড দেওয়া হয়, তবে সেটা কি মূলত একটি ডেবিট কার্ড বলে এটি আবার অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক কার্ড নামেও পরিচিত হয়ে থাকে।
এই কার্ডের মাধ্যমে যদি আপনি কোন প্রকার টাকা খরচ করতে চান বা কোন প্রকার লেনদেন করতে চান তাহলে আপনি যে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এই কার্ডটি পেয়েছেন সেই একাউন্টে অবশ্যই টাকা থাকতে হবে। এখানে আপনার কোন মাসিক ইনকাম বা কোন জব এর ইনকাম বা কোন ক্রেডিট লিমিট এর মতো কোনো ধরাবাধা নিয়ম নেই।
ব্যাপারটা যদি আরো পরিষ্কারভাবে বলা যায় তাহলে বলতে হবে যে আপনার কাছে যে টাকা আছে সেই টাকা যদি আপনি যেকোনো ধরনের খরচ বা লেনদেন করতে চান তাহলে আপনার কাছে থাকা সেই টাকা দিয়েই করতে পারবেন।
এখানে সাধারণত আপনার একাউন্টে যত টাকা থাকবে আপনার নেয়া ডেবিট কার্ড টিতেও আপনি তত টাকাই পেয়ে থাকবেন। এবং এই থাকা টাকা টি থেকে আপনি যদি কোথাও পেমেন্ট করে থাকেন বা ক্যাশ উইথড্র করে থাকেন তখন আপনি যতোটুকু টাকা খরচ করেছেন সেটা আপনার ব্যাংক হিসাব থেকে সেই টাকাটি কেটে নেবে।
এখানে মূলত আপনার পেমেন্ট করা হবে আপনার যে ব্যাংক একাউন্টটি রয়েছে সেখান থেকেই। এই ডেবিট কার্ড থেকে যদি আপনি আপনার পকেটে রাখেন তাহলে আপনি এটুকু নিশ্চিত হয়ে যেতে পারেন যে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টিকে, এবং আপনার সম্পূর্ণ ব্যালেন্স সহ আপনি পকেট এ রেখেছেন।
আপনার এই ডেবিট কার্ড টি দিয়ে আপনি বাইরের দেশে যে লেনদেন নাও করতে পারেন। কেননা এটি ইন্টারন্যাশনালি কাজ করে না তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনাকে বিশেষ কিছু শর্ত এবং কার্যক্রমের মাধ্যমে আপনার কাছে থাকা ডেবিট কার্ড টি বাংলাদেশের নিজস্ব দেশের বাইরে ব্যবহার করার সুযোগ সেটি আপনাকে সেই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দিতে পারবে।
তবে এই সুযোগটি সম্পূর্ণ ব্যাংকের উপর নির্ভর করে থাকে যদি সেই ব্যাংক না চায় তাহলে আপনি বাইরের দেশে টাকা উঠাতে পারবেন না। আর যদি ব্যাংক আপনাকে সেই সুযোগটি দিয়ে থাকে তাহলেও আপনার ইন্টারন্যাশনাল পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হবে। আপনি যেই দেশে যাবেন সেই দেশের বৈধ কাগজপত্র অবশ্যই ব্যাংক আপনার কাছ থেকে দেখতে চাবে।
তাই আপনার ইন্টারন্যাশনাল পাসপোর্ট দিয়ে আপনি এই সুযোগটি পেতে পারেন। তবে এই ডেবিট কার্ড গুলো সাধারণত বেশিরভাগই নিজেস্ব দেশের ভেতরে কোন স্তরে পেমেন্ট করা বা এটিএম থেকে ক্যাশ উইথড্র করা আপনি অনলাইনে কোন কেনাকাটা করলেন অনলাইনে যেকোন লেনদেনের জন্য এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ডেবিট কার্ড সাধারণত আরেক ধরনের হয়ে থাকে যাকে বলা হয় প্রিপেইড ডেবিট কার্ড চলুন জেনে নেই ডেবিট কার্ড সম্পর্কে।
প্রিপেইড ডেবিট কার্ড:
বর্তমানে এটি অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই প্রিপেইড ডেবিট কার্ড। সাধারণত বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি উন্নত মানের ব্যাংগুলো একটি বিশেষ ধরনের ইন্টারন্যাশনাল ডেবিট কার্ড ইস্যু করে থাকে যাকে সাধারণত প্রিপেইড ডেবিট কার্ড বলা হয়।
এই ডেবিট কার্ড টি ব্যবহার করার জন্য আপনার কোন ব্যাংক একাউন্ট না থাকলেও চলবে, এবং আপনি কোন চাকরিজীবী না হলেও চলবে। এই কার্ডগুলোতে আপনাকে সাধারণত কার্ডের বিপরীত টাকা টি ডিপোজিট করতে হবে এই ডিপোজিট করার পরেই আপনি কার্ডটি আপনার মতো ব্যবহার করতে পারবেন।
মনে করুন আপনি কি ফোন ব্যবহার করছেন এখন সেই ফোনটি ব্যবহার করতে গেলে বা আপনাকে কথা বলতে গেলে নিশ্চয়ই আপনাকে ফোনে টাকা ঢুকাতে হবে। মানে ফ্লেক্সিলোড করতে হবে তা না হলে আপনি কাউকে কল করতে পারবেন না। ঠিক একই রকম এই প্রিপেইড ডেবিট কার্ডের সিস্টেমটি এটি ব্যবহার করতে গেলে আপনাকে প্রথমে এখানে টাকা ডিপোজিট করতে হবে।
আর যদি আপনার কোনো ভালোমানের ইন্টারন্যাশনাল পাসপোর্ট থাকে তাহলে আপনি এটি ব্যবহারে আরো কিছু সুবিধা পেয়ে থাকবেন। সে সুবিধাগুলি হলো আপনি সেই ইন্টারন্যাশনাল পাসপোর্ট এর সাহায্যে ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন গুলো করে ফেলতে পারেন। যেমন: গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ গেম পারচেজ, করা কিংবা ফরেন ই কমার্স সাইট থেকে প্রোডাক্ট পারচেজ করা, কিংবা ফেসবুক বুস্ট গুগোল অ্যাডস খরচ করা, ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজ করা, অনলাইনে বিভিন্ন সাইটে ইনকাম করা ইত্যাদি।
তবে এইসব ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন এর জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার ইন্টারন্যাশনাল পাসপোর্ট এর দরকার পড়বে। আমাদের বাংলাদেশকে প্রিপেইড ডেবিট কার্ড হিসেবে মূলত ইস্টার্ন ব্যাংক বেশ জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছে।
এই দুটো কার্ডের মধ্যে কোনটি আপনার কাছে সেরা হতে পারে তা জানার জন্য আপনাকে অবশ্যই এর সুবিধা ও অসুবিধাগুলো জানতে হবে। তা না হলে আপনি কোনোভাবেই বুঝতে পারবেন না যে কোন কার্ড টি আপনার জন্য সুবিধাজনক। তাই চলুন এই সুবিধা অসুবিধা গুলো আমরা জেনে নেই।
ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা সমূহ:
ডেবিট কার্ড এবং ক্রেডিট কার্ড দেখতে অনেকটা একই রকম।
কিন্তু এদের দুই কার্ড এর ভিতর বিশেষ পার্থক্য রয়েছে। যখন আপনি কার্ডটি ক্রয় করে নিয়মিত ব্যবহার করতে থাকবেন তখন বুঝতে পারবেন এদের মধ্যে পার্থক্যটা আসলে কোথায় হতে পারে। তবে আমরা এখন আপনাকে জানাবো জানিয়ে দিব ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারের সুবিধা গুলো
পুরস্কার পাওয়ার পয়েন্ট যোগ্য হন:
এখানে সাধারণত বেশকিছু পুরস্কার পয়েন্ট থাকে যেমন মূল্য ফেরত পয়েন্ট আকাশপথে বিনামূল্যে ভ্রমণ বাড়তি কোন পুরস্কার পয়েন্ট ক্রেডিট কার্ডের অন্য কিছু বিষয়। এটি নিয়ে প্রতিনিয়ত ও যদি আপনি লেনদেন করতে থাকেন তাহলে এই পুরস্কার গুলো পাওয়া যাবে। এই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারী অনেকেই আছেন যারা এই কার্ডটি নিয়মিত ব্যবহার করে এসব পুরস্কার পেয়েছিলেন।
ক্রেডিট স্কোর বাড়ান:
আপনি যদি আপনার কাছে থাকা ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার করে থাকেন তাহলে এর আরেকটি সুযোগ থাকে। আপনি আপনার ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে যত বেশি লেনদেন ও যত বেশি ব্যবহার করবেন তা হবে আপনার ক্রেডিট কার্ডের স্কোর বাড়ানোর একটি অন্যতম কৌশল। যা এই ক্রেডিট কার্ডের একটি বিশেষ সুবিধা হয়ে থাকে। আপনি যদি নিয়মিত ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সময়মতো বিল পরিশোধ করেন তাহলে আপনার দ্রুত বাড়তে থাকবে।
অধিকতর নিরাপত্তা যোগ্য:
প্রতারণা চুরি বা একই খরচ একাধিকবার হতে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আপনি আপনার ক্রেডিট কার্ডের এক বিশেষ ধরনের নিরাপত্তা পেয়ে থাকবেন। নিরাপত্তার দিক দিয়ে বলতে গেলে এই কার্ডটি নিরাপত্তাব্যবস্থা অনেক বেশি এবং অনেক ভালো।
এবার আপনাদের কাছে আলোচনা করা যাক ক্রেডিট কার্ডের অসুবিধা সমূহ।
ক্রেডিট কার্ডের অসুবিধা:
আপনার ব্যবহৃত ক্রেডিট কার্ডের যেমন নিয়মিত সুবিধা রয়েছে তেমনি এর বেশ কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যা বেশ কিছু মানুষের কাছে এক বিশেষ ধরনের অসুবিধা মনে হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই অসুবিধা গুলো সম্পর্কে।
অতিরিক্ত খরচ:
ক্রেডিট কার্ড দিয়ে আপনি যাই কেনাকাটা করুন না কেন এর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে এর খরচ এর দিকে আপনার নজর রাখা। ধরুন আপনি কেনাকাটা করতে গিয়ে বেশি খরচ করে ফেলেছেন এইভাবে যে পরবর্তী তারিখে তো পরিষদ করতেই হবে তাছাড়াও গুনতে হবে এর বাড়তি সুদ।
বার্ষিক ফি সহ এর অন্যান্য চাঁদা:
বেশিরভাগ ক্রেডিট কার্ডে সাধারণত এক ধরনের বার্ষিক ফি আছে এছাড়াও এর কিছু চাঁদা আছে যা ভিন্নভাবে প্রযোজ্য হয় আপনাকে ভিন্নভাবে দিতে হতে পারে যেমন দেরিতে পরিষদের ফী, ব্যালেন্স ট্রান্সফারের ফী, ওভারড্রাফট ফী ইত্যাদি।
ক্রেডিট স্কোর সংক্রান্ত জটিলতা:
ক্রেডিট কার্ড দিয়ে আপনি যদি কোন কিছু কেনাকাটা করে থাকেন তাহলে মাসিক কিস্তি পরিশোধে যদি আপনি ব্যর্থ হন তাহলে এটা আপনার ক্রেডিট কার্ডের স্কোরের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এগুলোই সাধারণত ক্রেডিট কার্ডের এক বিশেষ ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে। যা আমাদের জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবার আসা যাক ডেবিট কার্ড সম্পর্কে। ডেবিট কার্ডের সুবিধা সমূহ নিচে আলোচনা করা হলো।
ডেবিট কার্ডের সুবিধাসমূহ:
ডেবিট কার্ড বর্তমান সময়ের অধিকাংশ মানুষের মন জয় করে নিয়েছে। আমরা অনেকেই আছি যারা ডেবিট কার্ড কে নিজেদের চলার সাথী হিসেবে সেটিকে সবসময় নিয়ে চলি। ডেবিট কার্ডের সুবিধা গুলো হলো।
বাড়তি ফি:
যখন আপনার সকল লেনদেনের ক্ষেত্রে আপনি আপনার ডেবিট কার্ড টিকে প্রয়োজন মত ব্যাবহার করছেন তাহলে আপনি এটি মনে রাখতে পারেন যে আপনার কোন বার্ষিক ফি বার চাঁদা দেওয়া নিয়ে কোনো কোন ভাবতে হবে না। সাধারণত ডেবিট কার্ড বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায় এবং এর জন্য কোন চাঁদা ফি প্রযোজ্য হয় না সঞ্চয়ী হিসাবে ওভারড্রাফট সুবিধা রয়েছে।
এর নিয়ন্ত্রিত খরচ:
সাধারণত কেনাকাটা ডেবিট কার্ড কে আপনি যখন ব্যবহার করবেন তখন খরচের সাধ্যের বাইরে যেতে পারবেন না কেননা আপনার একাউন্টে যদি টাকা না থাকে তাহলে কার্ড ঘষার মেশিন ডেবিট কার্ড ঘষে টাকা তুলতে পারবেন না। তবে বেশ কিছু ব্যাংক এক বিশেষ প্রয়োজনে ওভারড্রাফট এর সুবিধা দিয়ে থাকে তবে এটি সবার জন্য নয়।
এর কোনো সুদ গুনতে হবে না:
আপনি যদি ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে থাকেন তাহলে এর একটি অন্যতম সুবিধা হল এর কোন সুদ নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না।
আপনার কাছেই রয়েছে আপনার কার্ডে নিরাপত্তা:
কেননা ডেবিট কার্ড সাধারণত চুরি হওয়ার ক্ষেত্রে এক বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায় সেটি হচ্ছে ডেবিট কার্ডে কার্ডধারী নির্দিষ্ট সংখ্যক বার ও নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা তুলতে পারে। এছাড়াও আপনি আপনার ইচ্ছে মত পিনকোড ব্যবহার করে আপনার ডেবিট কার্ডের নিরাপত্তা আপনি বাড়িয়ে তুলতে পারেন।
সবকিছুরই কোনো-না-কোনোভাবে সুবিধা ও অসুবিধা দুটোই থাকে। ডেবিট কার্ডের সুবিধা যেমন রয়েছে তেমনি এর কিছু অসুবিধাও রয়েছে। তাই দেরি না করে চলুন জেনে নিই ডেবিট কার্ডের অসুবিধা গুলো কি কি।
ডেবিট কার্ডের অসুবিধা:
আপনার ব্যবহৃত ডেবিট কার্ড হয়তো কিছুটা অসুবিধা থাকতে পারে। তবে ক্রেডিট কার্ডের তুলনায় ডেবিট কার্ডে অসুবিধা কিছুটা কম চলুন জেনে নেওয়া যাক।
হ্রাস কৃত পুরস্কার পয়েন্ট:
আপনার কেনাকাটা হতে প্রাপ্ত পুরস্কার পয়েন্ট ডেবিট কার্ডের ক্ষেত্রে অনেক কম এটি সাধারণত ক্রেডিট কার্ডে বেশি হয়ে থাকে । এছাড়া বেশকিছু ডেবিট কার্ড রয়েছে যা কেনাকাটা করা কালীন বা লেনদেন করা কালীন কোন প্রকার পুরস্কার পয়েন্ট প্রদান করে না।
ক্রেডিট স্কোর বাড়ায় না:
আপনি যদি আপনার ডেবিট কার্ড দিয়ে যথাযথভাবে লেনদেন করে থাকেন কিন্তু হিসেব নামার হালচাল সুবিধাজনক না হয় তাহলে আপনার ক্রেডিট স্কোর বাড়বে না। তবে এটি মনে রাখতে হয় যে ক্রেডিট স্কোর কম থাকলে ব্যক্তিগতভাবে লোন নেওয়া অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
নিয়মিত ব্যালেন্স চেক করা:
যদি আপনি নিয়মিত ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে থাকেন এবং নিয়মিতভাবে লেনদেন করে থাকেন সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে নিয়মিতভাবে একাউন্ট ব্যালেন্স খতিয়ে দেখতে হবে। ব্যয়ের ক্ষেত্রে সাধারণত সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া যাবে না কেননা সেক্ষেত্রে বড়োসড়ো জরিমানা হতে পারে আপনার।
তবে ক্রেডিট কার্ডের তুলনায় ডেবিট কার্ডে অসুবিধা বেশ কিছুটা কম থাকে। এখন আপনার কাছে কোন কার্ডটি সেরা হতে পারে এটি আপনি ভালো বুঝতে পারবেন।
আমাদের লেখা আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে দয়া করে আপনাদের ইচ্ছা মত যে কোন সাইডে একবার শেয়ার করবেন। আপনাদের করা একটি শেয়ার হয়তো আমাদেরকে আরো নতুন আর্টিকেল লিখতে উৎসাহিত করবে।
You must be logged in to post a comment.