অনলাইন ইনকাম এর সবচেয়ে সহজ উপায় ব্লগিং। কিভাবে ব্লগিং এর মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ার গড়বেন

আসসালামু আলাইকুম। আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করবো অনলাইন ইনকামের অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি বিষয় সম্পর্কে। এটি হচ্ছে ব্লগিং এবং ওয়েবসাইট।  

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

আধুনিক বিশ্ব যে কতোটা উন্নত তা নিশ্চয়ই কম বেশি আমরা সবাই জানি। যুগ যুগ ধরে ধাপে ধাপে প্রযুক্তির উন্নয়নের জোয়ার আমাদের পৌঁছে দিয়েছে উন্নতির শিখরে। অনলাইন ইনকাম হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অনবদ্য এক আবিষ্কার। যার মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো মানুষ যেকোনো প্রান্ত থেকে ঘরে বসেই ইনকাম করতে পারে।

এখানে আমদের আজকের আলোচনার মূল বিষয় হলো ব্লগিং ও ওয়েবসাইট থেকে কিভাবে ইনকাম করা যায়। কিন্তু তার আগে আমাদের অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ, ভূমিকা ছাড়াই উপসংহারে চলে গেলে তো আর হবেনা। আপনারা যারা অনলাইনের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানেন কিংবা যারা পারদর্শী তাদেরকে তো নতুন করে বোঝানোর মতো কিছুই নেই।

কিন্তু যারা একেবারেই নতুন এবং তেমন কিছুই জানেন না অথচ মনের মধ্যে একটা আগ্রহ আছে অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে জানার আজকের লেখাটি অবশ্যই তাদের জন্য।

অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে ধারণা ঃ

সহজভাবেই বলি জিনিসটা। ইন্টারনেটের সাহায্যে কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের মাধ্যমে ঘরে বসেই ইনকাম করাকে অনলাইন ইনকাম বলা হয়ে থাকে। 

তারমানে হচ্ছে আপনি চাইলেই খুব সহজে আপনার হাতে থাকা এন্ড্রয়েড ফোনটি দিয়েই ইনকাম করতে পারবেন। আজকাল শহর, গ্রামের প্রায় সবার কাছেই স্মার্টফোন বা এন্ড্রয়েড ফোন আছে। আর হতে পারে এটিই আপনার ইনকামের উৎস।

অনলাইনে কি আসলেই ইনকাম করা যায়? 

যারা অনলাইনে ইনকাম করতে চান কিন্তু এই বিষয়টা নিয়ে কনফিউজড তাদের বলবো, হ্যাঁ অনলাইনে আসলেই ইনকাম করা যায়।বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ অনলাইনে ইনকাম করে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলেছে। এখানে আছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের কাজ।আপনাকে শুধু বুঝেশুনে সঠিক দিকে এগোতে হবে। ব্যস তাহলেই পেয়ে যাবেন সোনার হরিণ।  

 এতোকিছু থাকতে অনলাইনে ক্যারিয়ার কেন বেছে নিবেন?  

আজকাল চাকরির বাজারে চাকরি পাওয়া আর সোনার হরিণ খুঁজে পাওয়া প্রায় এক হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাকরির অভাবে লক্ষ লক্ষ বেকার যুবক দিশেহারা হয়ে থাকে। কিন্তু অনলাইনে চাকরির কোনো অভাব নেই। আর আপনি যদি একবার এখানে দাঁড়িয়ে যেতে পারেন তাহলে আর পিছু ফিরে তাকাতে হবেনা।

আচ্ছা আমরাতো সোশ্যাল মিডিয়ায় কতো সময় নষ্ট করে করে ভিডিও দেখি,চ্যাটিং করি চাইলেই কিন্তু এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে কিছু টাকা ইনকাম করতে পারি। যা দিয়ে নিজেদের ছোটখাটো শখ পূরণ করতে পারি। অনেক ছাত্র ছাত্রীরাই পড়াশোনার পাশাপাশি অনলাইনে কিছু সময় দিয়ে বাড়তি কিছু টাকা ইনকাম করতে পারে। এতে তারা নিজেদের হাত খরচ নিজেরাই চালাতে পারে। কারও উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকা লাগেনা। 

অনেক গৃহিণী আছে যাদের সংসারে বেশি কাজ থাকেনা। তারাও কিন্তু অনলাইনে নিজেদের প্রতিভা, দক্ষতা কাজে লাগিয়ে  উপার্জন করতে পারে।

এতক্ষণে  এটা তো নিশ্চয়ই স্পষ্ট যে, একটি কম্পিউটার  বা স্মার্টফোন থাকলেই আপনি অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন।  তাহলে এবার মূল আলোচনায় আসা যাক। 

ব্লগিং কি? 

ধরুন আপনি আপনার পছন্দের যে কোনো বিষয় সর্ম্পকে ইন্টারনেটে লিখেছেন এবং সেটি ছড়িয়ে দিচ্ছেন সবার মাঝে।এটাই ব্লগিং।

ব্লগের প্রকারভেদ ঃ

যেকোনো কিছু নিয়েই ব্লগ হতে পারে।যেমনঃ

১. লেখাভিত্তিক ব্লগ

২. শিল্প বা আর্ট ব্লগ

৩. ফটো ব্লগ 

৪. ভিডিও ব্লগিং 

৫. এম পি থ্রি ব্লগ 

ইত্যাদি। আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো বিষয়ে ব্লগিং করতে পারেন।

ব্লগিং করতে হলে যা যা প্রয়োজন ঃ

আপনি যদি শিওর হন যে, হ্যাঁ আপনি ব্লগিং করতে চান তাহলে আপনার দরকার হবে- 

১. একটি কম্পিউটার /ল্যাপটপ বা স্মার্টফোন 

২. ইন্টারনেট সংযোগ 

৩. একটি ইমেইল অ্যাকাউন্ট

৪. বাংলা লেখার জন্য সফটওয়্যার (বিজয়/অভ্র) 

৫. ব্লগিং এর জন্য একটি ওয়েবসাইট।

৬. ব্যাংক অ্যাকাউন্ট

ব্লগিং থেকে কিভাবে আয় করবেন? 

এই প্রশ্নের জবাবই এখন দেবো। সবার আগে আপনার একটা ব্লগিং সাইট থাকতে হবে। আপনি চাইলে এক্সপার্ট কাউকে দিয়ে আপনার জন্য একটা ওয়েবসাইট তৈরি করিয়ে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার তাকে কিছু টাকা দিতে হবে। নতুবা আপনি নিজেই নিজের জন্য একটা সাইট বানিয়ে ফেলতে পারেন ইউটিউব দেখে। 

নতুন একটা ওয়েবসাইট দুই ভাবে তৈরি করা যেতে পারে।

১. ফ্রী 

২. পেইড

ফ্রীতে যদি সাইট তৈরি করতে চান তাহলে ব্লগার ডট কম এবং ওয়ার্ডপ্রেস ডটকম  এর মাধ্যমে খুব সহজেই করতে পারবেন। অথবা আপনি চাইলে ১৫ শ থেকে ১৮ শ টাকা দিয়ে খুব ভালো মানের ডোমেইন হোস্টিং কিনে সাইট খুলতে পারেন।

এক্ষেত্রে আমার মতামত হলো আপনি কিছু টাকা খরচ করে ডোমেইন হোস্টিং কিনে সাইট খুলুন। কারণ সেই সাইটটা কোয়ালিটিফুল হবে। আর একবার দাড়িয়ে গেলে আপনি এখান থেকে কয়েক হাজার গুন টাকা ইনকাম করতে পারবেন। 

সাইট খোলার পর আপনার অনবরত লিখে যেতে হবে। এমনভাবে লিখবেন যাতে আপনার লেখাটা আকর্ষণীয় হয়। মনে রাখবেন প্রথমেই সফলতা আসবেনা। আপনি একের পর এক লিখে যাবেন আর আপনার সাইটে ভিজিটররা আসতে থাকবে। যখন আপনার সাইট  প্রতিদিন ১ হাজার ২ হাজার ভিজিটররা ভিজিট করবে আপনি গুগল অ্যাডসেন্সের সাথে যুক্ত হওয়ার আবেদন করবেন। এরপর তারা গ্রহণ করলে আপনাকে আর ভাবতে হবেনা। গুগল অ্যাডসেন্সের অ্যাড আপনার সাইটে শো করবে আর যতো ভিজিটর অ্যাডে ক্লিক করবে আপনি ততো টাকা পাবেন। মাস শেষে আপনি ৩০-৪০ হাজার টাকা বা তার বেশি ইনকাম করতে পারবেন শুধুমাত্র নিজের সাইট থেকেই।  যা দিন দিন বাড়তেই থাকবে। 

অনলাইন ইনকামের গুরুত্ব ঃ

বর্তমানে এই করোনা মহামারিতে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের পাশাপাশি আমাদের দেশের অর্থনীতিও হুমকির মুখে পড়েছে। মধ্যম আয়ের আমাদের এই দেশের মানুষের প্রায়ই অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের সাথে যুদ্ধ করতে হয়। এমতাবস্থায় করোনা মহামারি যেন এদেশের অর্থনীতিতে মরার উপর খাড়ার ঘা। স্কুল-কলেজ, অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা বন্ধ থাকায় লাখো মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে।

বিশাল এক জনগোষ্ঠী দারিদ্র্য সীমার কাছাকাছি পৌছে গেছে। শিক্ষিত জনশক্তির এক বিশাল অংশ একেবারেই মুখ থুবড়ে পরেছে। অনেকেই এই অবস্থায় পরিবারকে আর্থিকভাবে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

এই দূরাবস্থার মধ্যে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর নিকট অনলাইন আয়ের মাধ্যম এক আাশীর্বাদ স্বরুপ। অনলাইনে কাজ করে আয় করা এদেশের বহু সংখ্যক মানুষের নিকট নতুন এক দ্বার প্রান্তের সূচনা। মহামারীর পূর্বে থেকেই অনলাইন ইনকাম বহু মানুষকে বেকারত্ব থেকে মুক্তি দিয়েছে। এই মহামারীতে তা যেন নতুন রূপে নতুন লাখো মানুষকে সাহায্য করছে এগিয়ে যেতে। 

একটি এন্ড্রয়েড ডিভাইস থাকলে আর অনলাইনে কাজ করার কিছু কৌশল শিখে নিয়ে ঘরে বসেই টাকা উপার্জন সম্ভব। অনেকেই যাদের ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ রয়েছে তাদের রয়েছে আরও দারুন সব সুযোগ। অনলাইন ইনকামের বিভিন্ন ক্যাটাগরির উপর দক্ষতা অর্জন করে সহজেই টাকা উপার্জন করা যাচ্ছে। আমাদের দেশের পাশাপাশি বৈশ্বিক বাজারেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতির চাকা অনেকাংশে সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে। খুব সহজেই সামান্য কিছু দক্ষতা অর্জন করেই অনলাইনের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব হচ্ছে। 

অনেক গৃহিনী, অনেক নারী, যারা বাইরে কাজ করতে যেতে চাননা, প্রতিবন্ধী, এমনকি চাকরীর পাশাপাশি বাড়তি উপার্জনের জন্য অনলাইন ইনকাম একেবারেই যথাযথ। তূলনামূলক খুব সহজেই অর্থ আয়ের দারুন এক উৎস্য অনলাইন ইনকাম। তাই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় এবং জীবন যাত্রার মানকে উন্নত করতে অনলাইনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন কার্যকরী এক পন্থা।

উদাহরণ ঃ

আমার পরিচিত একজন আছেন যে নিজের অবসরকে কাজে লাগাতে চেয়েছিলো। তো যথারীতি সে অনলাইন ইনকামের দিকে ঝুঁকল। সে অনেক মেধাবী এবং পরিশ্রমী।লেখালেখি বিষয়ে খুব পারদর্শী। সে ঠিক করল ব্লগিং করবে। তো যেই বলা সেই কাজ। নেমে পড়লো মাঠে। ২০১৬ সালে নিজের ওয়েবসাইটে ব্লগ করা শুরু করলো। প্রথম দিকে তেমন ইনকাম হতোনা। তবুও সে তার লেখা থামাতো না। ধৈর্য্য সহকারে লিখেই যেতো।দিনে দিনে তার ভিজিটর সংখ্যা বাড়তে থাকলো। এক বছরের মধ্যে তার সাইট অনেকটা দাঁড়িয়ে গেলো। বর্তমানে সে ব্লগিং করে প্রচুর টাকা ইনকাম করছে।

সবশেষে বলবো যদি ধৈর্য্য ধরে নিজের দক্ষতা ও মেধা সঠিকভাবে অনলাইন জগতে কাজে লাগাতে পারেন তাহলে সফলতা আসবেই আসবে।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

লেখক সম্পর্কেঃ