শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গরমের ফল তরমুজের গুণাবলী

আসসালামু আলাইকুম, বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহ্ র রহমতে সবাই ভালো আছেন।

বর্তমান সময়ে করোনা ব‌্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় সারাদেশে চলছে কঠোর লকডাউন। বন্ধুরা অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হবেন না। আর বের হলে অবশ‌্যই মাস্ক ব‌্যবহার করুন, আর বারবার হাত স‌্যানিটাইজড করুন এবং ঘরে ফিরে ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ধোবেন। নিজে সুস্থ থাকুন এবং পরিবারের সবাইকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করুন।

প্রচন্ড গরম পড়েছে, গরমে সবার প্রান ওষ্ঠাগত। কোথাও মেঘের ছিটে ফোটাও নেই। এই গরমে সবার প্রান জুড়াতে আজ আমি আপনাদের সাথত্রেমুজের নানাবিধ উপকারিতা নিয়ে হাজির হয়েছি। তো চলুন বন্ধুরা শুরু করা যাক।

এই প্রচন্ড গরমে লাল টুকটুকে তরমুজ খেতে যেমন সবারই ভাল লাগে, তেমনই এই তরমুজ আমাদের শরীরের নানাবিধ উপকার করে। এক ফালি তরমুজ আপনাকে দেবে ঠান্ডা ও শীতল অনুভূতি। তাই তো সতেজ ও সজীব থাকতে গরমে এই ফলের চাহিদা সব থেকে বেশি। কেবল প্রশান্তি পেতেই নয়, স্বাস্থ্যগত দিক দিক থেকেও তরমুজের গুণাবলী অনেক। কিডনি ও হৃদপিন্ড সুস্থ রাখতে, হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতেও তরমুজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। রূপচর্চায়ও তরমুজের উপকারিতা পাওয়া যায়।

তরমুজের গুণাগুণ:

তরমুজে আছে পটাশিয়াম, ভিটামিন এ, সি ও বি-৬। এছাড়াও এতে আছে লাইকোপেন, অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও পানি। লাইকোপেনের উপস্থিতির কারণেই তরমুজ‍ টুকটুকে লাল হয়। তরমুজে ফ্যাটের পরিমাণ একেবারেই কম আর রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি। গবেষণায় পাওয়া গেছে, তরমুজে থাকা উপাদান লাইকোপেন মানবদেহের কয়েক ধরনের ক্যানসারের বিরুদ্ধে খুব ভালো কাজ করে।

তাহলে চলুন বন্ধুরা জেনে নেই এই গরমে তরমুজ উপকারিতা।

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে:

তরমুজে রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ভিটামিন বি। যা আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তরমুজ আমাদের দেহের ভেতর তৈরি হওয়া টক্সিনকে দূর করে, ফলে আমাদের শরীর হয়ে ওঠে একেবারে চাঙ্গা।

গরমে শরীরের পানির ঘাটতি কমাতে:

তরমুজে পানির পরিমাণ ৯২ ভাগ। তাই শরীরকে ঠান্ডা করতে ও পানিশূন্যতা কমাতে তরমুজের জুরি নেই। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ক্যাফেইনের তুলনায় তরমুজ অনেক গুণ বেশি উপকারী। তাই ক্যাফেইন কমিয়ে আমাদের বেশি বেশি তরমুজ খাওয়া উচিত।

সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর হার্টের জন‌্য:

তরমুজে প্রচুর পরিমাণে লাইকোপেন থাকার জন‌্য এই উপাদান হার্টকে সুস্থ রাখে ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে সাহাজ‌্য করে। এ ছাড়া এ ফলে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড ব্লাড প্রেশার কমাতেও কাজ করে।

অতিরিক্ত ওজন কমাতে: 

তরমুজে প্রচুর পরিমানে পানি এবং অল্প পরিমাণে ক্যালোরি থাকায় এই ফল প্রচুর পরিমানে খাওয়া যায়। এর ফলে যেমন ক্ষিদে কমে যায়, আর সেইসাথে অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায‌্য করে।

কিডনি সুস্থ রাখতে:

তরমুজ কিডনির জন্য খুব উপকারী। এটি কিডনি ও মুত্রথলির বর্জ্য পদার্থ দূর করে। কিডনিতে পাথর হলে চিকিৎসকরা ডাবের পানি, তরমুজ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ত্বক ও চুলের যত্নে:

তরমুজের আরেকটি গুণ হলো এটি ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন সি ত্বক ও চুলে শক্তি সঞ্চারিত করে। লাইকোপেন ও বিটা ক্যারোটিন ত্বককে রোদে পোড়া থাকে রক্ষা করে। তাই বলা যায়, তরমুজে যেহেতু লাইকোপেন থাকে সেহেতু রোদে পোড়া ত্বকের একটি ভালো সমাধান হলো এই তরমুজ। এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ভিটামিন এ; যা ত্বকের জন্য খুব উপকারী। এক চামচ তরমুজের রস ও টক দই মিশিয়ে ত্বকে ১০ মিনিট লাগিয়ে পর ধুয়ে ফেলুন। শুষ্ক ও মলিন ত্বকে দারুণ কাজ করে এটি। 

দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ করতে:

আমরা সবাই-ই জানি যে, চোখের সুস্থতায় ভিটামিন এ- এর বিকল্প নেই। ভিটামিন এ রাতকানা রোগ দূর করে এটা আমাদের সবারই জানা। এক ফালি তরমুজে আপনি প্রতিদিনের প্রয়োজনের ৯-১০ ভাগ ভিটামিন এ পেয়ে যাবেন। যা আপনার চোখের স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখবে এবং দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায‌্য করবে ।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও হার্টে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে: 

তরমুজ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকটাই সাহায্য করে। এই ঠান্ডা ফলটি হার্টের জন্যও অনেক ভাল। এটি হার্টে সঠিকভাবে রক্ত সঞ্চালন করতে সাহায্য করে। এতে হার্ট ‘ব্লক’ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে তরমুজ:

তরমুজের লাইকোপেন সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে আপনার ত্বককে রক্ষা করে থাকে।

বয়সের ছাপ পড়ার মোকাবিলায় সাহায‌্য করে:

আপনার বয়স বাড়ার সাথে সাথে আপনার চেহারায় যে বয়সের ছাপ পড়ে তা তরমুজ খেলে দূর হয়। এতে সামান্য ক্যালোরি থাকলেও এটা ক্যারোটিনয়েড, ফ্ল্যাবোনয়েড এবং ট্রিটেফেনোয়েডের ফেনোলিক যৌগ সমৃদ্ধ। এগুলো বয়সের ছাপের মুখ্য কারণ। এইসব যৌগ ফ্রি র‌্যাডিক্যাল কোষের ক্ষতিকর প্রভাবের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়। অতএব, আপনার খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন তরমুজ রেখে অযাচিত বলিরেখা ও ত্বক কুঁচকে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পান। 

তো বন্ধুরা আজ এ পর্যন্ত। আমার এই পোস্টটি সময় নিয়ে পড়ার জন‌্য আপনাদের অনেক ধন‌্যবাদ।

সবাই ভালো, সুস্থ ও সুন্দর থাকবেন। আল্লাহ্ হাফেজ।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.