এফিলিয়েট মার্কেটিং কি? কিভাবে শুরু করবেন?

আপনি যদি একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন এবং অনলাইনে আয় করার কথা ভাবছেন, তাহলে বোধ হয় এফিলিয়েট মার্কেটিং (affiliate markeitng) কথাটি কখনো না কখনো তো অবশ্যই শুনে থাকবেন।

আমাদের চ্যানেলটি সাবসক্রাইব করুন

আর যদি না শুনে থাকেন, তবে এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আশা করি আপনার সময়টুকু বৃথা যাবে না। কেননা আজকের এই আলোচনায় আমরা এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে বিস্তারিতভাবে জানবো এবং সেই সাথে এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা সংশোধন করার চেষ্টা করবো।

আর শেষের দিকে আপনাদের জন্য রয়েছে এমন কিছু টিপস এন্ড ট্রিক্স যেগুলো ফলো করলে আপনিও হতে পারেন একজন সফল ও দক্ষ এফিলিয়েট মার্কেটার। তবে দেরী না করে চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

এফিলিয়েট মার্কেটিং

প্রথমেও দেখে নিই, আজকের আলোচনার প্রতিপাদ্য বিষয়গুলো-

এফিলিয়েট মার্কেটিং কী?, এফিলিয়েট মার্কেটিং কীভাবে হয়? এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করা হয়? আপনিই বা কেন এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবেন? এফিলিয়েট মার্কেটিং এ আয় এর পরিমাণ কেমন? এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে কী কী লাগে? 

একজন সফল এফিলিয়েট মার্কেটার হবার সম্পূর্ণ গাইডলাইন

এফিলিয়েট মার্কেটিং কী? What is affiliate marketing

এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে যেহেতু কথা বলবো, তাই এর আগে মার্কেটিং কী সে সম্বন্ধে আপনার একটু ভালো জ্ঞান কিন্তু অবশ্যয় থাকা উচিত। আভিধানিক অর্থে মার্কেটিং মানে হলো পণ্য বাজারজাতকরণ। অর্থাৎ কোন নির্দিষ্ট পণ্যের প্রচার ও প্রসার করাই হলো মার্কেটিং এর মূল কাজ। তবে জন্য দরকার যথাযথ রিসার্চ এবং এনালাইসিস। যার মাধ্যমে একজন দক্ষ মার্কেটারই পারে সঠিক পণ্যটি একজন সঠিক মানুষের কাছে সঠিকভাবে পৌছিয়ে দেয়া। কথা হচ্ছিল এফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে।

মার্কেটিং কী , তা হয়তো এতক্ষণে আন্দাজ করে ফেলেছেন। ডিকশনারীর মতে এফিলিয়েট কথাটির অর্থ হলো সম্বন্ধ করা বা সভ্যরূপে কোনকিছুর সাথে অন্তর্ভুক্ত করা। এখন এফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে বোঝায় আপনি কোন একটি প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ীর সাথে সম্বন্ধ রেখে তার পণ্যগুলো মার্কেটিং করে দিবেন। আর বিনিময়ে আপনি পাবেন পণ্যের কিছু লভ্যাংশ।

আসলে এফিলিয়েট মার্কেটিং (affiliate marketing) বলতে আমরা মূলত এটিই বুঝে থাকি। সোজাভাবে বললে, এফিলিয়েট মার্কেটিং এমন একটি মাধ্যম যার মাধ্যমে আপনি অন্য কারোর একটি প্রোডাক্ট বা পণ্যের জন্য কিছু কাস্টমার খুজে দিবেন। আর সে জন্য সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আপনাকে তাদের পণ্যের প্রফিট থেকে কিছু অংশ দিবে।

আপনি হয়তো ভাবছেন, আমি কীভাবে তাদের পণ্যের জন্য কাস্টমার খুজে দিবো? চিন্তার কিছু নেই, আমরা এক এক করে সব বিষয়ই ক্লিয়ার করবো, ইনশাআল্লাহ।

এফিলিয়েট মার্কেটিং কীভাবে হয়?

আপনি তো অনলাইনে কাজ করবেন। তাই বিষয়টিও অনলাইনেই শেষ হবে বলে আমরা ধরেই নিতে পারি। এবার জানবো, কীভাবে এফিলিয়েট মার্কেটীং করা হয়। ধরুন, আপনি এমাজন থেকে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চাচ্ছেন।

এর জন্য আপনাকে এমাজন সাইটে গিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে রেজিস্টার করে নিতে হবে। তারপর আপনাকে একটি লিঙ্ক দেয়া হবে সেখান থেকে। যেটাকে এফিলিয়েট লিঙ্ক বলা হয়। এবার সেই লিঙ্কটি আপনি আপনার নিজের কোন ইউটিউব চ্যানেল,ব্লগ বা সোশাল মিডিয়াতে শেয়ার করলেন।

তারপর যখনই কেউ সেই লিঙ্ক এর মাধ্যমে এমাজন সাইটে গিয়ে কোন পণ্য কিনবে, সেই পণ্যের একটি নির্দিষ্ট লভ্যাংশ আপনার একাউন্টে চলে আসবে। বুঝতেই পারছেন, একেক পণ্যের জন্য আপনার কমিশনের পরিমাণও ভিন্ন ভিন্ন হবে।

তাছাড়া আপনি যেই অনলাইন শপিং অয়েবসাইট থেকে মার্কেটিং করবেন, তারা আপনাকে শুরুতেই তাদের সকল নিয়মকানুন ডিটেইলস জানিয়ে দিবে।

Read More-

এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করা হয়?

আর্টেকেলের এই পর্যন্ত যেহেতু পড়ে ফেলেছেন, তাই ধরেই নিতে পারি, আপনি ইতোমধ্যে আন্দাজ করে ফেলেছেন যে কেন শুরু হলো এই এফিলিয়েট মার্কেটিং। প্রথমত একজন দোকানদার বা পণ্য বিক্রেতার মাধ্যমে খুব বেশি সংখ্যক কাস্টমার যোগার করা সম্ভভ হয় না। তাই তিনি তার পণ্যের জন্য অনলাইনে প্রোমট করতে চান। আর এই প্রোমট এর কাজটি করে দেয় একজন এফিলিয়েট মার্কেটার। বিনিময়ে তিনি পান কিছুটা কমিশন।

উদাহরণ হিসেবে ধরুন, আপনার বন্ধুর একটি রেস্টুরেন্ট আছে। একদিন আপনি সেখানে গেলেন কিছু খাওয়ার জন্য। তারপর আপনার বন্ধু আপানাকে জানালো ইদানিং তার দোকানে কাস্টমার এর সংখ্যা খুব কমে গেছে। তাই সে আপনাকে বললো, বন্ধু তুই যদি আমাকে কিছু কাস্টমার যোগাড় করে দিতে পারিস, বিনিময়ে আমি তোকে কিছু টাকা দিবো।

এবার আপনার মনে পড়লো, ফেইসবুকে আপানার খাবার নিয়ে দারুণ একটি গ্রুপ আছে।সেখানে যদি আপনি আপনার বন্ধুর রেস্টুরেন্ট নিয়ে কিছু ভালো কথা বলতে পারেন। তাহলে হয়তো অনেকে আপনার কথায় আপানার বন্ধুর রেস্টুরেন্টে আসতে পারে।

তবে আপনি কিন্তু কোন টাকা ছাড়াই আপনার বন্ধুর জন্য এই কাজটি করে দিতে পারতেন। তবে চিন্তা করে দেখুন, সেক্ষেত্রে আপনি কিন্তু তেমন একটা দায়ীত্ববোধ মনে করতেন না।

আর যেহেতু যত বেশি কাস্টোমার আপনি আপনার বন্ধুর দোকানে নিয়ে আসতে পারবেন, ততই আপনার কমিশনের পরিমাণ বাড়বে, তাই আপনিও চেষ্টা করবেন বেশি বেশি করে লোক আপনার বন্ধুর রেস্টূরেন্ট এ যেন আসে। এখানে আমি আপানার কোন এক বন্ধুর উদাহরণ দিয়েছি। তবে আপনি অন্য কারোর জন্যও একইভাবে একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে সেইম কাজটি করে দিতে পারেন।

এবার আপনি একটু চিন্তা করে দেখুন, এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে কয় ধাপের মানুষের লাভ হচ্ছে? প্রথমত আপানার বন্ধু, যে পেল তার দোকানে বেশি বেশি কাস্টমার। ফলে তার লাভের পরিমাণও বৃদ্ধি পেল। এফিলিয়েট মার্কেটের ভাষায় যাকে বলা হয় মার্চেন্ট। মানে যার প্রোডাক্ট।

আর দ্বিতীয় লাভবান হলেন আপনি, যাকে এফিলিয়েট মার্কেটীং এর ভাষায় বলা হয় এফিলিয়েট মার্কেটার। তৃতীয় ক্ষেত্রে যিনি লাভবান হলেন তারা হলো কাস্টমার। আপনি হয়তো ভাবছেন ভোক্তা আবার কীভাবে এখানে লাভবান হচ্ছেন? দেখুন আপনি যদি তাদের না জানাতেন যে আপনার বন্ধুর রেস্টুরেন্টে খুব ভালো মানে খাবার স্বল্প মূল্যে দেয়া হয়। তাহলে কিন্তু তারা এ বিষয়ে জানতে পারতেন না। হয়তো তারা এমনই একটি রেস্টুরেন্ট এর কথা ভাবছিলেন। আর আপনার মাধ্যমে সেটার খোঁজও পেয়ে গেলেন।

সুতরাং বলা যায় এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে একটি ব্যবসার ব্যবসায়ী, এফিলিয়েট মার্কেটার ও ভোক্তা সবারই সমানভাবে কাজে আসে। শুনে অবাক হবেন, বর্তমান বিশ্বের শীর্ষ ধনী জেফ বেজোস ( শীর্ষ ই কমার্স সাইট এমাজনের সি ই ও) , যিনি কিছুদিন আগে বিল গেটস্ কে টপকিয়ে শীর্ষ ধনী হয়েছেন, তিনি কিন্তু এফিলিয়েট মার্কেটিং কে কাজে লাগিয়ে আজ এই পর্যায়ে তার প্রতিষ্ঠানকে তুলে এনেছেন। তাহলে বুঝতেই পারছেন, এফিলিয়েট মার্কেটিং এর পাওয়ার কতটূকু!!

আরও পড়ুনঃ

আপনিই বা কেন এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবেন?

এবার আপনি হয়তো ভাবছেন আপনিই বা কেন এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করবেন। প্রথমত আপনার যদি একটি বড় সাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেল থেকে থাকে, আর সেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভিজিট করে। তাহলে আপনি হয়তো আন্দাজও করতে পারবেন এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি কতটাকা ইনকাম করতে পারবেন।

আর আপনি অনলাইনে যেকোন জিনিস বিক্রি করিয়ে আয় করে নিতে নিতে পারেন আনলিমিটেড টাকা। যা আপনি হয়তো ইউটিউবিং বা সাইট থেকেও আয় করতে পারবেন না। আর অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য এর থেকে সহজ আর কোন মাধ্যম হতেই পারে না। যেখানে কেবল কোন পণ্যের জন্য কিছু কাস্টমার যোগাড় করেই আপনি অনেক টাকা আয় করতে পারেন।

আসলে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর পক্ষ নিয়ে যুক্তি দেখাতে গেলে তার লিস্ট এতটাই লম্বা হবে যে আপনি গুনে শেষ করতে পারবেন না। তবুও আপনার সুবিদার্থে আমি নিম্নে কিছু কারণ পেশ করছি-

  • এফিলিয়েট এর মাধ্যমে আয় করতে হলে আপনার কোনরকম ইনভেস্ট করার প্রয়োজন হবে না।
  • আপনার নিজের কোন প্রোডাক্ট থাকার দরকার নেই।
  • আপনি আপনার ইচ্ছেমত যেকোন প্রোডাক্ট প্রোমট করতে পারেন।
  • আর এইসব কাজ আপনি সম্পূর্ণ ঘরে বসেই করতে পারবেন।
  • প্রোডাক্টের এফটার সেলস সার্ভিস নিয়ে আপনাকে কোন দুশ্চিন্তা করতে হবে না।
  • ফুলটাইম জব করারা নিশ্চয়তা পাওয়া যায়।
  • সময়ের উপর আপনার স্বাধীনতা থাকে।
  • ইচ্ছে করলে তাই যখন তখন ভ্রমণে যেতে পারেন।
  • বড় বড় কোম্পানীগুলোর কাছে ভালো মানে একটা কদর পাওয়া যায়।

এভাবে বলতে গেলে কখনো তা শেষ হবার নয়। আসলে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে যে সময়, অর্থ আর ভ্রমণের স্বাধীনতা পাওয়া যায় অন্য কোন পেশাতে এতটা ফ্লেক্সিবিলিটি থাকে না।

এবার জানবো-

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করা যায়?

এক্ষেত্রে আপনার আয় এর পরিমাণ নির্ভর করবে, এফিলিয়েট এ আপনার মার্কেটিং দক্ষতা এবং আপনি কি পরিমাণ পণ্য বিক্রি করতে পারছেন। যত বেশি পণ্য আপনি বিক্রি করতে পারবেন ততই আপনার লাভ। তাছাড়াও বিক্রিত পন্যের কমিশনের উপরও আপনার আয় কিছুটা নির্ভর করে। কমিশন বেশি দিলে আপানার আয়ও অধিক হবে বুঝতেই পারছেন।

ভাই এত কিছু বুঝি না একটু খোলাসা করে বলেন, একজন সাধারণ এভারেজ এফিলিয়েট মার্কেটার মাসে কত টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারে?

তবে বলবো, একজন এস এম এস মার্কেটার এফিলিয়েট মার্কেটিং করে মাসে ১ থেকে ২ লাক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারে। আর সেক্ষেত্রে কয়েক হাজার টাকা ইনকাম করা কিন্তু অনেক সহজ ব্যাপার। তবে একটা কথা। আপনাকে কিন্তু একজন দক্ষ এফিলিয়েট মার্কেটার হতে হবে।

আসল কথা হলো, দক্ষতা ছাড়া কোন কিছুতেই বেশিদূর আগানো যায় না। যত বেশি দক্ষ হবেন ততই আপানার আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। তবে চিন্তার কারণ নেই , আমাদের এই আর্টিকেল এর নিচের দিকে আমরা সে বিষয়েই কথা বলবো, আপনিও কীভাবে একজন দক্ষ এফিলিয়েট মার্কেটার হতে পারবেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে কী কী লাগে?

আচ্ছা সবই বুঝলাম, কিন্তু এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে হলে আমার কী কী লাগবে?

প্রথমেই বলে রাখি, এর জন্য আপানাকে কোন অর্থ ব্যয় করতে হবে না। কারণ এই পেশাতে কোন রকম ইনভেস্টমেন্ট এর ঝামেলা নেই। যা প্রয়োজন তা হলো, ভালো মানের একটি অনলাইন প্লাটফর্ম। আর আপনার এই অয়েবসাইট বানাতে যা খরচ তাই শেষ। একটা ভালো মানের সাইট বানাতে পারলেই আপনিও মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করতে পারেন কেবলমাত্র আপানার সাইটের মাধ্যমে কিছু কাস্টমার যোগান দিয়ে। অর্থাত নিজস্ব একটি ভালো ভিউসম্পন্ন অয়েবসাইট বানানোটাই আপনার মূল কাজ, এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার জন্য। আর এটাই আপনার মূল খরচ। দ্বিতীয়ত আপনার যা লাগবে, তা হলো ভালো মানের কন্টেন্ট অর্থাৎ যে কন্টেন্ট এর মাধ্যমে আপনি আপানার গ্রহীতাদের কোন নির্দিষ্ট পণ্য কেনার জন্য আগ্রহী করে তুলতে চলেছেন।

আমাদের মধ্যে অনেকেই বলেন যে, আচ্ছা স্মার্টফোনের মাধ্যমে কি এফিলিয়েট মার্কেটিং করা সম্ভব?

তাদের জন্য বলছি, হ্যাঁ অবশ্যই সম্ভব! তবে আপনার এফিলিয়েট সাইটের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি ডেস্কটপ বা লেপটপ কম্পিউটার থাকলে ভালো হয়। কেননা মোবাইলে ওয়ার্ডপ্রেস এর অনেক কাজ করতে গেলে অনেক জায়গায় অনেক সময় ল্যাকিং পোহাতে হয়। আশা করি বুঝতে পেরেছেন, এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে গেলে আপানার কী পরিমাণ খরচ হতে পারে। সহজ কথায়, বিনি পয়সায় আপনি  নিজের জন্য একটি কর্মসংস্থান করে নিতে পারছেন।

একজন সফল এফিলিয়েট মার্কেটার হবার সম্পূর্ণ গাইডলাইন

এবার আমরা আপনাকে জানিয়ে দিব, আপনি কীভাবে জিরো থেকে একজন সফল হিরো হিসেবে এফিলিয়েট মার্কেটার হতে পারবেন। তবে সাথেই থাকুন। আমি ধাপে ধাপে আপনাদের বিষয়টি খোলাসা করার চেষ্টা করবো।

১। নিশ বাছাই করণঃ

নিশ কথাটি আপনার যদি অপরিচিত থাকে তাহলে বলে রাখি নিশ মানে হলো আপনি কোন বিষয়বস্তু নিয়ে কাজ করতে চলেছেন। আর এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে সবার আগে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো নিশ সিলেকশন। ব্যবসার ক্ষেত্রে নিশ হলো ব্যবসাটি কোন জিনিস এর উপর করা হচ্ছে। আর আপনার ওয়েবসাইটের জন্য নিশ হলো আপনার ওয়েবসাইটের মূল বিষয়বস্তু।অনলাইনে ব্লগিং, মার্কেটিং , ডিজাইনিং, শেয়ার বাজার, নিউজ, এস ই ও, পড়াশোনা সহ এরকম আরো অসংখ্য নিস রয়েছে। সেখার থেকে একটি পছন্দমত নিশ বাছাই করে আপনিও শুরু করতে পারেন, এফিলিয়েট মার্কেটিং এর প্রাথমিক পর্ব।

২। প্রোডাক্ট ঠিক করে ওয়েবসাইট সেট আপ করাঃ

এবার আপনি যে সমস্ত প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করবেন তার জন্য একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে নিন। আর যদি এটি আপনার আগে থেকেই থেকে থাকে তাহলে তো কোন চিন্তাই নেই। তবে আপানার অয়েবসাইটটি কিন্তু খুব ভালোভাবে সাজাতে হবে। যেন রিডাররা এসে আবার ঘুরে চলে না যায়। তাই ভিউয়ারস দের আকৃষ্ট করার জন্য আপনি বিভিন্ন রকম অনলাইন টুলস এর সাহায্য নিতে পারেন।

৩। এস ই ও করে ওয়েবসাইট গুগল র‍্যাংকিং করানোঃ

ভালো ভিজিটর না পেলে আপনার অয়েবসাইট কিন্তু কোন কাজে আসবে না। তাই ভিজিটর বাড়াতে হলে আপনাকে অবশ্যই সঠিকভাবে এস ই ও করে , আপানার অয়েবসাইটটি গুগল কিংবা ইয়াহু এর মত সার্চ ইঞ্জিন এ সামনের দিকে র‍্যাংক করাতে হবে।

৪। ভালো মানের কন্টেন্ট তৈরি করে ভিজিটর নিয়ে আসাঃ

এখন ধরে নিলাম, আপনি খুব ভালো কোন এস ই ও এক্সপার্টের সাহায্য নিয়ে আপনার অয়েবসাইটটি গুগলের প্রথম দিকেই র‍্যাঙ্ক করিয়ে ফেলেছন, তবে আপনার কন্টেন্ট যদি মানসম্মত না হয়, আর ভিজিটরের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে না হয়, তাহলে কিন্তু যেই লাউ সেই কদুই রয়ে যাবে। কোন লাভ হবে না। তারা আসবে আর ঘুরে চলে যাবে। আপনি প্রোডাক্ট প্রোমট কিন্তু ভালোমত হবে না। তাই ভালো মানের কন্টেন্ট তৈরিতেও আপনাকে যথেষ্ট মনোযোগী হতে হবে।

৫। এফিলিয়েট প্রোডাক্ট প্রোমট করাঃ

এবার আসি সর্বশেষ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ এফিলিয়েট প্রোডাক্ট প্রোমট করবেন কীভাবে। এর জন্য আপনাকে বিভিন্নন এফিলিয়েট মার্কেটপ্লেসে যেয়ে সাইন আপ করতে হবে। তারপর তারা আপনাকে একটি ইউনিক এফিলিয়েট লিংক প্রদান করবে। আর আপনার কাজ হবে, শুধু সেই লিঙ্কসমূহ আপনার ওয়েবসাইটের আর্টিকেলের বিভিন্ন জায়গায় যুক্ত করা।

এরপর যখনই কেউ আপনার লিঙ্ক ব্যবহার করে অনলাইন শপে যেয়ে কোন প্রোডাক্ট কিনবে, সাথে সাথে আপনি তার থেকে কিছুটা কমিশন পেয়ে যাবেন। নিম্নে আমি কিছু ভালো ভালো এফিলিয়েট মার্কেটপ্লেস এর নাম উল্লেখ করছি।

  • Nerdwallet
  • Amazon
  • Rutimaker
  • Bdshop
  • Bohubrihi

এরকমভাবে আপনি আরো বেশ কিছু এফিলিয়েট মার্কেটপ্লেসের নাম পাবেন, শুধু আপনাকে গুগলে সার্চ করলেই হবে। সেখান থেকে আপনার ইচ্ছে মত যেকোন একটি সিলেক্ট করে এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারেন।

সর্বপরি আপনাকে যে কাজটি করতে হবে তা হলো ধৈর্যশীল হওয়া। ধৈর্যশীল না হলে আপনি কখনো অনলাইনে আয় করতে পারবেন না। তাই প্রথম দিকে যতই ব্যর্থতা আসুক, দমে গেলে চলবে না। কাজ চালিয়ে যেতে হবে। ধীরে ধীরে আপনার কাজের মান যতই উন্নত হবে, ইনকামের সম্ভাবনা ততই বৃদ্ধি পাবে।

আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি সামান্যতম হলেও এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্বন্ধে কিছুটা ধারণা অর্জন করতে পেরেছেন। আর যদি মনে করেন, এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে হয়তো কারো একটু হলেও উপকার হতে পারে, তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।অসংখ্য ধন্যবাদ পুরোসময় সাথে থাকার জন্য।

Enjoyed this article? Stay informed by joining our newsletter!

Comments

You must be logged in to post a comment.

Related Articles
লেখক সম্পর্কেঃ