আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে জানেন না এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে না বললেই চলে। কেননা আধুনিক বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ মানুষ ডিজিটাল ডিভাইসের উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ অনলাইন ইনকাম এর মাধ্যমে নিজেদেরকে স্বাবলম্বী করছে।
বর্তমান সময়ে সকালে ঘুম থেকে উঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মানুষ প্রযুক্তির উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। অনলাইনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের জন্য মানুষের এই প্রযুক্তি ও অনলাইন নির্ভর মানসিকতা অনেক সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। মানুষ এখন অনেক প্রতিকূলতা অনুভব করছে। এত প্রতিকুলতার ভিতর আশার আলো এটাই যে কর্ম ক্ষেত্রে নতুন একটি সম্ভাবনা যোগ হয়েছে। তা হল- অনলাইন ইনকাম!!!
তাই আজকে আমি আপনাদের অনলাইনে ইনকামের ছয়টি সহজ উপায় বলবো। যার মাধ্যমে আপনারাও সহজে অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন :
১. কন্টেন্ট রাইটিং
কন্টেন্ট রাইটিংঃ কন্টেন্ট রাইটিং মূলত লেখালেখির কাজ। লেখালেখির মাধ্যমে আপনি অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। দিন দিন মানুষের যেমন অনলাইনের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে ঠিক তেমনি কন্টেন্ট রাইটার দের চাহিদাও বাড়ছে। ব্লগিং, এফিলিয়েট মার্কেটিং, ইনফো প্রোডাক্ট, লিড জেনারেশন, ফেসবুক মার্কেটিং, গুগল অ্যাডসেন্স ইত্যাদি প্রয়োজনে কন্টেন্ট রাইটারের চাহিদা ব্যাপক।
এই সেক্টরে কাজ করতে চাইলে আপনার অবশ্যই লেখালেখির দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কম্পিটিশন অনেক কম হওয়ার কারনে খুব সহজেই কাজ পাওয়া যায় এই সেক্টরে। কন্টেন্ট রাইটিং শিখে আপনি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে অনলাইনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
২. ডিজিটাল মার্কেটিং
ডিজিটাল মার্কেটিংঃ অনলাইন ইনকামের আর একটি বড় উৎস হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। কাজের অনেক সেক্টর থাকায় এবং শিখতে তুলনামূলক সহজ হওয়ার কারনে নতুনদের কাছে এই পেশাটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে আপনি আমার ডিজিটাল মার্কেটিং কি এই পোস্টটি পড়ে আসতে পারেন। আমি আশা করি আপনি উপকৃত হবেন ইনশাল্লাহ
৩. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংঃ বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। যোগাযোগ ও বিনোদনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া অন্যতম। বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া যেমনঃ ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কডিন,ইন্সটাগ্রাম,পিন্টারেস্ট,রেডিট,স্ন্যাপচ্যাট ইত্যাদি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে, যোগাযোগ ও বিনোদনের পাশাপাশি এসব মিডিয়া ব্যবহার করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়। বিভিন্ন ছোট- বড় কোম্পানি তাদের পণ্যের প্রচার-প্রচারণার জন্য এসব মিডিয়া ব্যবহার করে থাকে।
দেশি-বিদেশি অনেক কোম্পানি থাকার কারনে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটরের চাহিদা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। অধিক ফলোয়ার সমৃদ্ধ আপনার যদি বেশ কিছু ফেসবুক পেজ থাকে তাহলে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন কোম্পানি আপনার সাথে নিজে থেকেই যোগাযোগ করবে। আপনি এসব বিজ্ঞাপন সংস্থার সাথে কাজ করে ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ফ্যান ফলোয়ার তৈরি করা থেকে শুরু করে তাদেরকে ধরে রাখতে খুবই ধৈর্যশীল এবং সতর্কবান হতে হয়।
৪. এফিলিয়েট মার্কেটিং
এফিলিয়েট মার্কেটিংঃ অনলাইন ইনকাম এর আর একটি জনপ্রিয় পদ্ধতির নাম এফিলিয়েট মার্কেটিং। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মুল কনসেপ্ট হচ্ছে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট বা পণ্য বা সেবার বিপনণে সহায়তা করা। উদাহরণস্বরূপঃ সাধারনত মানুষ কোন পণ্য বা সেবা অনলাইন থেকে কেনার আগে ঐ প্রোডাক্ট বা পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে তারপর প্রোডাক্টটি ক্রয় করে। আপনার কাজ হচ্ছে ঐ সকল প্রোডাক্ট সমূহকে আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা।
এখন কেউ যদি আপনার ওয়েবসাইট থেকে ঐ প্রোডাক্টটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আপনার বসানো এফিলিয়েট লিংক এ ক্লিক করে প্রোডাক্টটি ক্রয় করে তাহলে আপনি ঐ সকল প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে একটি এফিলিয়েট কমিশন পাবেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে মাসে মিনিমাম ৫০০-১০০০ ডলার ইনকাম করা যায়। এটাই মূলত এফিলিয়েট মার্কেটিং, প্রচলিত কথায় ঘুমিয়ে ইনকাম !
৫. ইউটিউব মার্কেটিং
ইউটিউব মার্কেটিংঃ বর্তমান সময়ে অনলাইনে অর্থ উপার্জনের আর একটি অন্যতম পদ্ধতি হচ্ছে ইউটিউব মার্কেটিং। ইউটিউব মার্কেটিং এর মাধ্যমে খুব সহজেই অনলাইনে ইনকাম করা যায় বলে এই সেক্টরটি দিন দিন অনেক বেশি জনপ্রিয় হচ্ছে। শুধুমাত্র ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে এবং ঐ সকল ভিডিও কন্টেন্ট অনেক মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে অর্থাৎ ভিডিও কন্টেন্ট গুলোকে এমনভাবে অপটিমাইজ করতে হবে যেন অনেক মানুষ আপনার তৈরি করা কন্টেন্টটি দেখে এবং রেস্পন্স করে।
এর জন্য আপনার প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ হচ্ছে ভিডিও ক্যামেরা,মোবাইল অথবা কম্পিউটার এবং ভিডিও এডিট করার জন্য ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। এক্ষেত্রে আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি গ্রো করতে মিনিমাম ৬-১২ মাস সময় লাগতে পারে। এটা নির্ভর করবে আপনার পরিশ্রম ও ডেডিকেশনের উপর। ইউটিউব মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি প্রতি মাসে(৫০০-১০০০) ডলার বা তারও বেশি অনলাইন ইনকাম করতে পারবেন। কাজের ধরণ অনুযায়ী কম বেশি হতে পারে। এটা কিন্তু ফিক্সড না। ইউটিউব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের ইউটিউব মার্কেটিং পোস্টটি দেখে আসতে পারেন।
৬.গুগল অ্যাডসেন্স
গুগল অ্যাডসেন্সঃ পৃথিবী জুড়ে অনলাইনে অর্থ উপার্জন করার একটি জনপ্রিয় উৎসের নাম গুগল অ্যাডসেন্স। বর্তমান সময়ে গুগল অ্যাডসেন্স নামটি শোনেননি এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে না বললেই চলে। আমরা মাঝে মাঝে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইট ভ্রমণ করি। ওয়েবসাইট ভ্রমণ করার সময় মাঝে মাঝে আমাদের সামনে কিছু বিজ্ঞাপন দেখায়। এই বিজ্ঞাপন গুলি মূলত গুগল অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে দেখানো হয়ে থাকে। আমরা যখন ঐ সব বিজ্ঞাপন দেখি এবং আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বিজ্ঞাপন গুলিতে ক্লিক করি তখন ঐ ওয়েবসাইটের মালিক কিছু টাকা পায়।
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে বন্ধুদের শেয়ার করুন। আর কমেন্ট করে জানিয়ে দিন আপনার মতামত। ধন্যবাদ।
You must be logged in to post a comment.