আমাদের দেশে বেকারত্বের সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ।।সঠিক কর্মসংস্থানের অভাবে অনেক ছেলেমেয়ের বসে দিন কাটছে । চাকরির জন্য ছুটছে এক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিষ্ঠানে।।
এই সকল বেকার দের কি কোন ভাবেই তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারবে না ! অবশ্যই পারবে , বর্তমান যুগে অনেক ছেলে মেয়ে ঘরে বসে আয়ের পথ বেছে নিয়েছে । আপনি যদি নিজেকে সেই ভাবে গড়ে তোলেন তবে ঘরে বসেই নিজের ভাগ্য ফেরাতে পারবেন , তবে এর জন্য কিন্তু অবশ্যই ধৈর্যের এবং অধ্যবসায়ের প্রয়োজন । বলে রাখা ভালো আমাদের দেশের প্রায় ২ লাখ তরুন তরুনী ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে জড়িত।
অনলাইনে আয় কী ?
সহজ ভাষায় যদি বোঝাতে চাই তবে সেটা হল ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন কাজ করে আয় করাকে বোঝায় যাকে আমরা সহজ ভাষায় ফ্রিল্যান্সিং ও বলে থাকি । মনে করুন আপনি কাউকে একটা কাজ দিলেন , এবং কাজ করিয়ে নেওয়ার পরে টাকা দিলেন ঠিক এই রকম ই হল অনলাইনে কাজের ধরন । ধরুন আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন পারেন , কেউ আপনাকে একটি টি শার্ট ডিজাইন করতে বললেন এবং ডিজাইন শেষে আপনি টাকা পেলেন এটাই হল ফ্রিল্যান্সিং , আর জিনি কাজ করিয়ে নিলেন অর্থাৎ যিনি কাজ টা আপনাকে দিলেন তিনি করলেন আউটসোর্সিং ।
অনলাইন থেকে আয় করার উপায় গুলো
কোন কোন কাজ শিখলে আপনি বিভিন্ন উপায়ে আয় করতে পারবেন সে সম্পর্কে একটু জেনে নেই ।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর মাধ্যমে আয়ঃ
প্রযুক্তি যেভাবে উন্নতি সাধন করছে ঠিক তেমনি মানুষে ব্যাবসার প্রসার ও ঘটছে। সবাই আস্তে আস্তে ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে পড়েছে। সবাই নিজের একটা আলাদা ভার্চুয়াল ঠিকানা বানানোর চেস্টায় আছেন । বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে এই ভার্চুয়াল ঠিকানা সাহায্য করে। এই ভার্চুয়াল ঠিকানার নাম হল ওয়েবসাইট ।
বর্তমান বিশ্বে ৬৫ কোটির ও বেশি ওয়েব সাইট আছে এবং প্রতিনিয়ত এর সংখ্যা বেড়েই চলেছে । এই বিপুল পরিমান ওয়েব সাইট ডেভলপমেন্ট কিংবা নতুন করে পুরনো ওয়েব সাইট গুলো ডেভলপ করার জন্য প্রচুর পরিমান ওয়েব ডেভলপার প্রয়োজন । এ কারনে অনলাইন মার্কেট প্লেস গুলোতে প্রতিনিয়ত ওয়েব ডেভলপমেন্টের কাজের চাহিদা বেড়েই চলেছে ।
আপনি যদি একজন প্রফেশনাল ওয়েব ডেভলপার হতে চান তবে আপনাকে কিছু বিষয় সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে যেমনঃ- HTML , CSS, PHP, JavaScript , jquery , MySql । এই বিষয় গুলো ভালো ভাবে শিখে যে কেউ শত শত কোটি টাকার ওয়েব ডেভলপমেন্ট এর বাজারে প্রবেশ করতে পারেন ।
ওয়েব সাইট ও গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে আয়ঃ
যারা আকা আকি করতে ভালো বাসেন । কম্পিউটার কিংবা কাগজে কলমে সময় পেলেই কিছু না কিছু ক্রিয়েটিভ জিনিস আকিয়ে ফেলেন তাহলে তাদের জন্য এই পেশা টি হবে সর্বোত্তম । বাংলাদেশের বেশির ভাগ মেয়েরা কিন্তু গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে প্রতি মাসে ভালো পরিমানে অর্থ উপার্জন করছেন ।
অবশ্য এই পেশা টি অনেক টা ঝুকিহীন এবং অন্যান্য পেশার মানুশ সময় পেলেই এই ধরনের কাজ করতে পারেন । একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার বেশ কিছু কালার, টাইপফেস , ইমেজ এবং এনিমেশনের মাধ্যমে গ্রাহকের চাহিদা পুরন করে থকে । এর আউট পুট ডিজিটাল কিংবা প্রিন্ট উভয়ই হতে পারে ।
একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার এর কখনো কাজের অভাব হয়না । ইন্টার্যাক্টিভ মডিয়া , প্রমোশনাল ডিসপ্লে , জার্নাল, কর্পোরেট রিপোর্ট , সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন, লোগো ডিজাইন, ওয়েব সাইট ডিজাইন সহ আরো অনেক সেক্টরে কাজের সুযোগ রয়েছে ।
প্রতিবছর আমাদের দেশের ছেলে মেয়েরা প্রায় ৮০ লাখ টাকার মত অর্থ আয় করে । যদি আপনি ভালো ভাবে শিখতে পারেন তবে আপনার ও কাজের কোন অভাবে থাকবে না । বিভিন্ন মার্কেট প্লেসে এক্কটা লোগো ২ থেকে ২ হাজার ডলার পর্জন্ত বিক্রি হয় । বেশ কিছু ভালো মার্কেট প্লেস হল ৯৯ ডিজাইন্স.কম , ফাইভার , ইনভাটো ইত্যাদি । এই সুকল মার্কেট প্লেসে কাজের কোন অভাব হয় না । আর আপনি ভালো ভাবে শিখে কাজ করতে নামলে আশা করি নিরাশ হবেন না ।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয়ঃ
আপনি কোন মার্কেট প্লেসে কাজ করতে পারলেন না , কিংবা কাজ পেলেন না তাই বলে আপনি কি আয় করতে পারবেন না ! অবশ্যই পারবেন। বর্তমান সময়ে নতুন একটি ফ্রিল্যান্সিং মাধ্যম হল ডিজিটাল মার্কেটিং । এর জন্য আপনার প্রয়োজন বাংলা এবং ইংরেজি ভাষার উপর দক্ষতা এবং একটি ইন্টারন্যাশনাল মাস্টারকার্ড ।
কোন একটি পন্য কিংবা কোন একটি অনুষ্ঠানের বিজ্ঞাপন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে দিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছানো কে ডিজিটাল মার্কেটিং বলা হয় । এই ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় কিছু টেকনিক এবং গবেশনার , যাতে আপনি আপনার টার্গেট করা মানুষ (ক্রেতার) কাছে বিজ্ঞাপন টা পৌছাতে পারেন । ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি ভালো আয় করতে পারবেন গ্রাহকের কাছ থেকে ।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করুনঃ
এফ্যিলিয়েট মার্কেটিং ঠিক একই রকম তবে ভিন্নতা হল এক্ষেত্রে আপনি একটি পন্য বিক্রি করতে পারলে সেই পন্যের একটি কমিশন পাবেন । ধরুন আপনার একটি ফেসবুক পেজ কিংবা ইউ টিউব চ্যানেল কিংবা একটি ওয়েব সাইট আছে । এখন আপনি চাইলে কোন কম্পানির কোন পন্যের বিজ্ঞাপন দিলেন (অবশ্যই সেই পন্যের এফিলিয়েট থাকতে হবে)।
এখন যদি কেউ আপনার ফেসবুক পেজ / ইউ টিউব চ্যানেল কিংবা ওয়েব সাঈট এ দেওয়া লিংক থেকে পন্যটি কিনে তাহলে সেই পন্যের বিক্রির জন্য আপনি একটা কমিশন ।এই সকল আয়ের মাধ্যম গুলো যেমন দারাজ, বিক্রয় ডটকম । এই সকল অয়েব সাঈটে একটি এফ্যিলিয়েট একাউন্ট খুলতে হবে এর পর এদের পন্য নিজ উদ্যোগে মার্কেটিং করতে হবে ।
কেউ যদি আপনার দেওয়া লিংক এ প্রবেশ করে কোন পন্য ক্রয় করে তাহলে আপনি একটি ভালো কমিশন পাবেন । বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক বেকার যুবক যুবতী আছে যারা কিনা কম্পিউটার সম্পর্কে সামান্য তম ধারনা রাখেন তারা এই মার্কেটিং পেশা কে বেছে নিয়েছেন আয়ের উৎস হিসেবে ।
এই ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু তেমন শিখতে হবে না , শুধু গবেশনা করে ভালো ভাবে মার্কেটিং করতে পারলেই ভালো আয় করতে পারবেন ।
গুগল এডসেন্স
গুগল এডসেন্স এর আওতায় আপনি ৬৮% সিপিসি বা কস্ট পার ক্লিক পাবেন যেটার মাধ্যমে অনেক আয় করা সম্ভব যেটা সম্পুর্ণ প্যাসিভ ইনকাম। আপনারা নেট ইউজ করার সময়ে অনেক এড দেখে থাকবেন এই এয়াড যে সাইটে দেখবেন সেই সাইটের মালিকের আয় হবে আপনিও এই ভাবে আয় করতে পারেন।
এই অ্যাডসেন্স থেকে আয়ের জন্য আপনার ইউটিউব চ্যানেল বা কোন ওয়েবসাইট থাকতে হবে যার মালিক হবে শুধুমাত্র আপনিই হবেন । কারণ অন্য কারোর জিনিস অ্যাডসেন্স এপ্রুভ করে না। এরপর অ্যাডসেন্সে এপ্রুভ করে দিলেই আপনার ঐ সকল মাধ্যমে অ্যাড শো হবে। আর যত বেশি ভিউ আসবে তত বেশিই ইনকাম হবে আপনার।
এই ইনকামের টাকাও আপনার অ্যাডসেন্স একাউন্টে এড হবে৷ অ্যাডসেন্সের এর একটি নিয়ম রয়েছে তা হল ১০০ ডলার না হওয়া পর্যন্ত আপনি এই টাকা ক্যাশ করতে পারবেনা।
সর্বপরিঃ
আপনি যদি নব্য ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজেকে গড়তে চান তবে এই গুলোর মধ্যে যে কোন একটা পছন্দ করে নিজের অনলাইনে আয়ের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন ।
তবে একটা কথা হল অনলাইনে কাজের জন্য প্রচুত ধৈর্যের প্রয়োজন , গ্রাহকের সাথে কথোপকথনের জন্য ভালো ইংরেজি জানা টা একটু হলেও আবশ্যক কারন বেশির ভাগ গ্রাহক কিন্তু বিদেশী , তারা কিন্তু বাংলা বুঝেন না । নিজের কাজের প্রতি সৎ ও নিষ্ঠাবান হতে হবে । তাহলে আপনি কম সময়ে ভালো উপার্জন ক্ষম হয়ে উঠবেন ।।।
You must be logged in to post a comment.